পুতিনের বচ্চামিপনায় লুকিয়ে আছে প্রতিশোধ
পরাগ মাঝি: যে মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমেরিকা থেকে রাশিয়ার কূটনৈতিকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার নোটিস ধরিয়ে দিলেন, সেই মুহূর্তে এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া কি কি পদক্ষেপ নিতে পারে তার ছকও নিশ্চয়ই তার মাথায় ছিলো। কী হতে পারতো এর প্রতিক্রিয়ায়? হতে পারতো রাশিয়াও আমেরিকার কূটনৈতিকদের বহিষ্কার করেছে, হতে পারতো আমেরিকার আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পক্ষের শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে রাশিয়া পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।
এসবের কোনো প্রতিশোধই নেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। আগেরদিন রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত একটি এ্যাংলো-আমেরিকান স্কুল বন্ধ করে দিলেও পরদিন শুক্রবার পুতিন ঘোষণা করেন, আমেরিকার পথ অনুসরণ করে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনীতিককেই বহিষ্কার করবে না। যদিও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ কূটনৈতিক বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, রাশিয়াও সমসংখ্যক আমেরিকার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করবে। এমনকি আমেরিকা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাকারোভা এক হুঁশিয়ারি বিবৃতিতে বলেছিলেন, এমন হলে রাশিয়াও পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।
রাশিয়া পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছেও। তবে, সেটা প্রতিশোধ পরায়ণতায় নয় বরং আমন্ত্রণে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন প্রতিশোধ নেওয়ার সময়কালে একটি মধুর প্রতিশোধের ছক আঁকেন। সে অনুযায়ী, তিনি রাশিয়ায় অবস্থানরত রুশ কূটনীতিকদের সন্তানদের দাওয়াত করেন তার নিজ ডেরায়। প্রেসিডেন্ট ওবামা নিশ্চয়ই এমনটি কখনো চাইবেন না যে, তার প্রশাসনের দ্বারা বহিষ্কৃত রাশিয়ার কূটনীতিকরা যখন বাড়ির পথ ধরবেন ঠিক তখনই রাশিয়ায় আমেরিকার কূটনীতিকদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পুতিনের সঙ্গে গল্প-গুজব আর হৈ হুল্লোড় করে সময় কাটাবে!
সুক্ষ প্রতিশোধ পরায়ণ পুতিন আমেরিকার সিদ্ধান্তকে অবন্ধুত্বসুলভ আখ্যা দিয়ে তার বাসভবন ক্রেমলিনে ক্রিসমাস এবং নববর্ষের একটি পার্টির আয়োজন করেন। সে পার্টিতেই আমেরিকার কূটনৈতিক প্রজন্ম ছিলো দাওয়াতি মেহমান। কখনো কখনো বচ্চামিপনায়ও লুকিয়ে থাকে প্রতিশোধের আগুন। আর এটা প্রমাণ করলেন স্বয়ং পুতিন। থাকে স্মার্টনেসও। অন্তত আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো ঢাক-ঢোল পিটিয়েই এ ঘোষণাটি দিলেন। ফরেন পলিসি অবলম্বনে