‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’কে দায়মুক্তি দিয়ে করা আইন অবৈধ ও বাতিলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
এনামুল হক: ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’কে দায়মুক্তি দিয়ে করা আইন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ অপরিসীম ক্ষমতাবান নয়। একই সাথে যৌথ বাহিনীর কোনো সদস্য আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক রায়ে এ কথা বলা হয়। ৫২ পৃষ্ঠার এই রায়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যৌথ বাহিনীর ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’কে দায়মুক্তি দিয়ে করা আইন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে এই অভিমত দিয়েছেন বিচারকরা।
রায়ে আরও বলা হয়, সংসদকে ভুলে গেলে চলবে না যে তাদের ক্ষমতা সংবিধানের বিধিবিধান দ্বারা সীমাবদ্ধ। এ অভিমত দিয়ে হাইকোর্ট দায়মুক্তি অধ্যাদেশকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছে। ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মোহাম্মদ আশরাফুল কামাল সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আইন প্রণয়ন না করতে জাতীয় সংসদকে বারণ করে আদালত বলেছেন, আইনগত প্রতিকার পাওয়ার অধিকার সংবিধান সব নাগরিককে দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কোনো আদালতে প্রতিকার চাইতে এবং কারও বিরুদ্ধে মামলা বা বিচার প্রার্থনা করতে পারবে না-এটা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের ধারণার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। রায়ে বলা হয়, এ অভিযানের সময় যৌথ বাহিনীর কোনো সদস্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা প্রতিকার চেয়ে ফৌজদারি বা দেওয়ানী মামলা করতে পারবে। মূল রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের সিনিয়র বিচারক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। নিজস্ব অভিমত দিয়ে রায়ে একমত পোষণ করেছেন কনিষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ২০১২ সালের ১৪ জুন হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি করে একই বছরের ২৯ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজাহরুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ নামে পরিচালিত অভিযানের কার্যক্রমকে দায়মুক্তি দিয়ে করা আইনটি কেন সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে ওই অভিযানে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম