ইস্তাম্বুল নাইটক্লাবে ইসরায়েলি তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যু
কামরুল আহসান: মেয়েটির নাম লিয়ান। বয়স মাত্র ১৮। বাড়ি ইসরায়েলের তাইরা শহরে। নতুন বছর উপলক্ষে সে বেড়াতে চেয়েছিল তুরস্কে। সে কোনোদিন নিজের দেশের বাইরে কোথাও যায়নি। বাবা রাজি হননি। তুরস্কের পরিস্থিতি এখন ভালো নয়, এই বলে মেয়েকে অনেক বুঝিয়েছেন। কিন্তু, মেয়ে জিদ ধরে ছিল। আরও তিন বান্ধবীর সাথে সে তুরস্কে যাবে। তার কিছু হবে না, সব সময়ই কি আর খারাপ কিছু হয় নাকি। তার কিচ্ছু হবে না এই বলে সেও বাবাকে বুঝাতে চেষ্টা করছিল বারবার। তাও বাবা যখন একদমই অনুমতি দিচ্ছিল না সে গিয়ে ধরলো ফুপি লায়লাকে। ফুপি লায়লা তার বাবাকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে অনুমতি নিয়ে আসে। নতুন বছরের আগের দিন তারা এসে পৌঁছায় তুরস্কে। আর নতুন বছর উদযাপন করার জন্য চার বান্ধবী যায় রেইনা নাইটক্লাবে। মধ্যরাতে নতুন বছরের একদম মুহূর্তের মুখে সেই নাইটক্লাবে এসে আক্রমণ করে এক বন্দুকদারী। তার গুলি খেয়ে মারা যায় ৩৯ জন। তাদের মধ্যে লিয়ান একজন। তার আরও দুজন বান্ধবী আহত হয়েছে। খবর পাওয়ার দেড়ঘণ্টার মধ্যে তেল আবিব থেকে উড়ে এসেছেন লিয়ানের বাবা। আশা ছিল, মেয়ে হয়তো আহত হয়ে পড়ে আছে কোনো হাসপাতালে। কিন্তু, না, নিহত লোকগুলোর ছবির মধ্যেই তাকে পাওয়া গেল। তা দেখে লিয়ানের ফুপি একেবারে বিমূঢ় হয়ে গেছে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বারবার বলছে, আমি জীবনেও আমাক্ষে ক্ষমা করতে পারবো না। আমি কেন তাকে তুরস্কে যাওয়ার অনুমতি দিলাম!
নাইটক্লাবে ঢুকার আগ মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেছে লিয়ান। মাথায় মুকুটপরা হাস্যোজ্জ্বল ছবিটি দেখে যে- কোনো মানুষের অন্তরাত্মা কেঁদে উঠবে। মাত্র হাইস্কুল শেষ করেছে সে। ডেন্টিস্ট হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছিল। তার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল এক মুহূর্তে। সিএনএন