ডিএনসিসি মার্কেটে চলছে ধোয়া-মোছার কাজ শুক্রবার খুলে দেওয়া হচ্ছে গুলশান মার্কেট ক্ষয়ক্ষতি প্রায় হাজার কোটি টাকা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও মাসুদ আলম: রাজধানীর গুলশান ১-এর ডিএনসিসি মার্কেটের একাংশ (পাকা মার্কেট) শুক্রবার খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওই অংশের দোকান মালিক সমিতি। সমিতির সভাপতি এস এম তালাল রেজবী গতকাল মার্কেটের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন, আপনারা যার যার দোকান পরিষ্কার-পরিছন্ন করুন। আগামী শুক্রবার থেকে মার্কেট খুলে দেওয়া হবে।
এ ঘোষণার পরপরই দোকান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করে শ্রমিকরা। ডিএনসিসি মার্কেটের পাশের মার্কেট গুলশান শপিং সেন্টারের ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে। এদিকে অগ্নিকা-ে মার্কেটের একাংশে (কাঁচা মার্কেট) ৬শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ডিএনসিসি কাঁচা মার্কেটের সভাপতি শের মোহাম্মদ। তিনি জানান, কাঁচা মার্কেটে মোট ৪০০ দোকান ছিল। আগুনে দোতলার মার্কেটটি পুরোপুরি ধসে পড়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আপাতত সবজি ও মুদি ব্যবসায়ীদের পার্কিংয়ের জায়গায় অস্থায়ীভাবে বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।
ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন লাগার পর থেকেই ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে আসছেন পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে মার্কেটে। তবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেছেন, এটি নিছকই দুর্ঘটনা। গতকাল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণ উল্লেখ করে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়রি করেছে। গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়ীরা পৃথকভাবে যার যার দোকানের ক্ষতি উল্লেখ করে জিডি করছেন।
মার্কেটের ব্যবসায়ী আফরোজা বলেন, মার্কেটের সামনে এলে চোখের জল ধরে রাখতে পারি না। আগুন আমার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। এস এন এস হোম ডেকোর ফার্নিচারের মালিক আহমেদ শাওন জানান, আগুনে তার প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে চায়না থেকে মাল আনেন তিনি। এখন সব মালামাল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তিনি সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী নাজমুল হুদা বলেন, এই মার্কেটের সকল ব্যবসায়ী আজ পথে বসেছে। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রয়োজন। অনেকেই নিজের শেষ সম্বলটুকু বিনিয়োগ করে ব্যবসা করছিলেন। আজকের এ ক্ষতি কিভাবে পূরণ হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। ক্ষতির ঘটনায় তিনিও থানায় জিডি করেন।
গতকাল সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে মার্কেটের পিছনের অংশ দিয়ে কালো ধোঁয়ার কু-লি বের হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা চেষ্টা চালাচ্ছেন আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। যদিও ব্যবাসায়ীরা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে। সম্পাদনা: এনামুল হক