বিচারপতি নিয়োগে এবছরই আইন করবে সরকার সুপ্রিম কোর্ট যতবার আদেশ দেবে ততবার পুনর্বিবেচনার অনুরোধ
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী ও এস এম নূর মোহম্মদ: উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন করতে যাচ্ছে সরকার। এই আইন চলতি বছরই করতে চাইছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে আইন করার বিষয়ে সরকারের আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেই। রাষ্ট্রপতি এ ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিবেন এবং নির্দেশনা দিবেন সেভাবে কাজ করবে সরকার। আইন মন্ত্রণালয় এখন রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন দলের সঙ্গে সংলাপে বসছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে ও সংলাপে তারা নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য আইন করার অনুরোধ করেছেন। কেমন করে তাদের নিয়োগ করা দরকার ও কিভাবে বাছাই করা হবে কমিশন সদস্যদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নতুন কিছু আইন সংযোজনের উপর জোর দিচ্ছেন কোনো কোনো রাজনৈতিক দল।
এদিকে আইন মন্ত্রণালয় এখন সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর করা নিয়ে সমস্যায় রয়েছে। প্রধান বিচারপতির চান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরাতন হাইকোর্ট ভবন থেকে সরিয়ে ওই ভবন সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দিতে হবে। এমনিতেই বিচারপতিদের ও তাদের স্টাফদের বসার ব্যবস্থার জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। ওই জায়গা সংকট নিরসনের জন্য প্রয়োজন আইন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত। এসব বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কথা বলেছেন সাংবাদিকদের কাছে। তিনি বুধবার একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেছেন। ওই অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, ভবনটি দখলমুক্ত করে সেটি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার জন্য তাদের কাছ থেকে দুই দফা চিঠি পেয়েছি। দুই দফা চিঠি পাওয়ার পর আমরাও দুবার চিঠি দিয়েছি। দুবারই চিঠি দিয়ে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেছি।
আসলে এখানে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ আমরা চাইলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর করতে পারি না। এখানে বিচারের বিষয়টি রয়েছে। এছাড়াও এটি এখন সরালে জনগণও বিষয়টি ভালভাবে নিবে না।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার অভিজ্ঞতা এর আগে আমাদের ছিল না। আমরা বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউশন গঠন করেছি। তারা কাজ করছে। আস্তে আস্তে তাদের অভিজ্ঞতা পর্যায়ক্রমে বেড়েছে। আর এই বিচারের বিষয়টি আজকে সারাবিশ্বে স্বীকৃত। এই ট্রাইব্যুনালে সুষ্ঠু বিচার উপহার দিচ্ছে। বিচার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ভবনে বিচার কাজ অব্যাহত থাকবে।
ট্রাইব্যুনালে ও প্রসিকিউশনে পরিবর্তন আসতে পারে এমন কথা শুনা যাচ্ছে এই প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউশন টিমকে আরও গতিশীল করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটা আমরা করব।
উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন প্রণয়নের বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনায় রয়েছে এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের ব্যাপারে কথা বলার সময় সাবধানে বলতে হয়। হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগে বিচারপতি সংকট দেখা দিলে আমরা বিচারপতি নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানাব। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এটা কেবল সংকট থাকলেই যে হবে সেটা নয়, যখনই প্রয়োজন তখনই বিচারপতি নিয়োগ দেব। তবে সেখানে দুটো জিনিস আমরা করতে চাই। তাহলো নিয়োগটা যেন বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকে। যোগ্য লোককে নিয়োগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাব। বিচারপতি নিয়োগে আইন এই বছরের মধ্যে করা হবে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশন গঠন ও পরিচালনা নিয়ে সরকার কোনো আইন করবে কিনা এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে এই বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা আছে। আর এ ব্যাপারে এখতিয়ার শুধু রাষ্ট্রপতির। রাষ্ট্রপতি সংলাপ করছেন। তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিবেন। আইন প্রণয়ন করার প্রয়োজন হলে রাষ্ট্রপতি বলবেন। আমরা রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছি। সম্পাদনা: এনামুল হক