গণতন্ত্রের বিজয় দিবস আজ দেশব্যাপী কর্মসূচি অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধের দিন : আওয়ামী লীগ
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: আজ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’। ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই দিবসটি পালন করে আসছে। তবে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো এই দিবসটিকে গণতন্ত্রের কালো দিবস বলে আখ্যায়িত করেছে।
এ দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কর্মসূচি ঠিকভাবে পালনের জন্য দেশের সকল জেলা, মহানগর ও উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সাথে তিনি দেশের সর্বস্তরের জনগণকে গণতন্ত্রের বিজয়ের এই ঐতিহাসিক দিনটি উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের জন্য আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের গতকাল এক বিবৃতিতে জানান, দলের জেলা, মহানগর ও উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ ও বিজয় র্যালী। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ দুপুর আড়াইটায় রাজধানী ঢাকার রাসেল স্কয়ার প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সমাবেশ ও বিজয় র্যালীর আয়োজন করেছে।
রাসেল স্কয়ারের সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ এমপি। ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আবুল হাসনাত। এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানাসমূহে ৫ জানুয়ারির অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে। দেশব্যাপী এই কর্মসূচিতেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাসসকে বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। ওইদিন নির্বাচন না হলে মার্শাল ল হতো বাংলাদেশে। দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়তো। এই দিন নির্বাচন না হলে দেশে গণতন্ত্র থাকতো না। বাংলাদেশের অবস্থা থাইল্যান্ডের মতো হতো। আমরা কোথাও কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারতাম না। এই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল বাধাকে অতিক্রম করে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাই আমরা এই দিবসকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করব।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছে। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। নির্বাচিত ব্যক্তিরাই দেশ পরিচালনা করবে- এ পদ্ধতি নিশ্চিত হয়েছে। তিনি বলেন, জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত বিএনপি অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল। বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে সাথে নিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চায়। জনগণ তাদের আর ওই সুযোগ দেবে না।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।
আওয়ামী লীগের দাবি, একাত্তরে যে চেতনা এবং রাজনৈতিক শপথে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছিল সেই চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের সমগ্র অর্জন বিলীন করার আকাশ সমান ষড়যন্ত্র থেকেও জাতি রক্ষা পায় এদিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় চালুর দাবিতে আন্দেলন শুরু করে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশব্যাপী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিশেষ করে ভয়াল নাশকতা, ধ্বংসযজ্ঞ, নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা, লাগাতার অবরোধ-হরতালের নামে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়ে পুরো দেশকেই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যাসহ ও অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বিএনপি জামায়াত। এসব বাধা অতিক্রম করে দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩৪টি আসনে বিজয়ী হয়। জাতীয় পার্টি ৩৪টি এবং আওয়ামী লীগের শরিক ওয়াকার্স পার্টি ৬ এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ পাঁচটি আসনে বিজয়ী হয়ে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করে।