নির্বাচন কমিশন নিয়ে কী করবেন রাষ্ট্রপতি? বিএনপির সামনে এখন অপেক্ষা
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বিএনপির সামনে এখন অপেক্ষা। দলের কর্মসূচি পালন করা ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠন, আইন প্রণয়ন ও কমিশনার নিয়োগ নিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রপতি কী করতে চায় সেজন্য অপেক্ষা করছে। এসব বিষয়ে সরকারের ও রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত জানার পর তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য একজন নেতা বলেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। এই উপলক্ষে সকল জেলা ও উপজেলায় কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে বিএনপি থেকে। এই কর্মসূচি পালন করার জন্য ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি যাতে সফলভাবে করা সম্ভব হয় সেজন্য জেলা ও উপজেলার নেতারা কাজ করছেন। তবে কেন্দ্রের আশঙ্কা সরকার ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য কর্মসূচি সফল করা কঠিন হতে পারে। তবে বাধা আসলেও সেই কর্মসূচি পালন করতে হবে। সেভাবে নেতারা প্রস্তুতি রেখেছে। কিন্তু কি হয় তা দেখার অপেক্ষা করছে বিএনপি।
বিএনপির ওই সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি ছাড়াও গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের জন্য ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইছে।
ওই সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন। ওই সমাবেশ করার জন্য বিএনপি পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তারা অনুমতি পায়নি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ট একজন নেতা বলেন, আমরা ৭ জানুয়ারির সমাবেশ সফল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তবে অনুমতি এখনো মিলেনি। অনুমতি না দিতে পারে এমন আশঙ্কা তো আমাদের রয়েছে। গতবার আমাদেরকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি ৫ জানুয়ারি। এই কারণে এবার আমরা ৫ জানুয়ারি সমাবেশ না করে ৭ তারিখ করতে চাইছি। গতবার আমরা যে কর্র্মসূচি দিয়েছি এর পাল্টা গণতন্ত্রের বিজয় দিবস অনুষ্ঠান পালনের জন্য সরকারি দল আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করার জন্য সমাবেশ ডাকে। দুই দল একই জায়গায় সমাবেশ ডাকার কারণে আর সেটাও দেওয়া হয়নি। গতবার সরকার ও তাদের দল থেকে এটা ইচ্ছে করে করা হয়েছিল, যাতে আমরা কর্মসূচি পালন করতে না পারি। আমরা এমন আশঙ্কা থেকে এবার ৭ জানুয়ারি সমাবেশ ডেকেছি। অনুমতি চেয়েছি। কিন্তু সেটাও দেওয়া হয়নি এখনো। আমরা অপেক্ষা করছি সরকার ও পুলিশ কি করে তা দেখার জন্য।
এদিকে এই দুটি ইস্যু ছাড়াও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সার্চ কমিটি নিয়োগ, নির্বাচন কমিশন এই সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দলগুলো এ নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপিও প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপির প্রস্তাব রাষ্ট্রপতি অনুসরণ করেন কিনা সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন। বিএনপির আশঙ্কা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরকার আলোচনা করবে। রাষ্ট্রপতি আলোচনা করার পর বোঝা যাবে তিনি কি করেন? তবে বিএনপির আশঙ্কা আওয়ামী লীগের কারণে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কিনা সেটা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও নিয়মনীতির মধ্য থেকেই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান করতে চাইছি। সরকার ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমাদেরকে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিচ্ছে না। কিন্তু রাজনেতিক কর্মসূচি পালনের অধিকার রাজনৈতিক দলগুলোকে না দিয়ে অধিকার হরণ করা হচ্ছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, এখন আমরা অপেক্ষা করছি সরকার কি করে। রাষ্ট্রপতি কি করেন। আর পুলিশই বা কি করে। কারণ আমরা ৫ ও ৭ জানুয়ারির কর্মসূচি পালন করতে চাইছি। আর সংলাপের পর রাষ্ট্রপতি কি সিদ্ধান্ত দেন সেটাও দেখতে হবে। সব মিলিয়ে অপেক্ষার মধ্যে সময় কাটছে। সরকার ও আওয়ামী লীগ কি করে সেটাও দেখতে হচ্ছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়টা গুরুত্বপুর্ণ। সম্পাদনা: শারমিন আজাদ