নিজস্ব প্রতিবেদক: দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে বহিঃবিভাগে দৈনিক রোগী আসছে কমপক্ষে দুই হাজার, সর্বোচ্চ তিন হাজার ও অন্তঃবিভাগে আসছে সর্বোচ্চ ৫০০ রোগীও। ২০১২ সালের ১৩মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল উদ্বোধন করেন। যাতায়াত সমস্যা থাকলেও অল্প সময়ে হাসপাতালটি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। স্বল্পমূল্যে ব্যবস্থাপত্র এবং ক্ষেত্র বিশেষ বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করে রোগীদের সুনাম কুড়িয়েছে হাসপাতালটি।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বর্তমানে এই হাসপাতালে ৪০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বসছেন নিয়মিত। তারা আন্ত-বহিঃবিভাগে রোগী দেখার পাশাপাশি প্রতিদিন ১২-১৬টি মেজর ও ১৫-২০টি মাইনর অপারেশন করছেন। চোখে ছানির জন্য হচ্ছে ফ্যাকো সার্জারি। এছাড়া হাসপাতালটির ডায়ালাইসিস বিভাগকে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে সেরা বলা হচ্ছে। কেননা, এ বিভাগে ৩৩টি মেশিনের মাধ্যমে প্রতিদিন ৬৬জন রোগী ডায়ালাইসিস সেবা পাচ্ছে। এর জন্য একজন রোগীর খরচ পড়ছে মাত্র ৪১৬ টাকায় ডায়ালাইসিস সেবা নিতে পারছেন।
কুর্মিটোলা হাসপাতালে আরও আছে, হেপাটোলজি, ক্যান্সার, নেফ্রোলজি, গ্যাস্ট্রোএন্টারলজি, পালমোলজি, ইউরোলজি, বার্ন ও মরচুয়ারি বিভাগ। এছাড়া ব্লাড ব্যাংক, জরুরি বিভাগ, জরুরি অপারেশন বিভাগ, ইপিআই, পরিবার পরিকল্পনা, যক্ষ্মার ডট সেন্টার। পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হচ্ছে ৭২ পদের। এর মধ্যে গরিব রোগীদের জন্য ১০ শতাংশেরও বেশি ছাড় দেওয়া হচ্ছে। অটোমেটিক মেশিনের বলে অতি অল্প মূল্যে করা হয় ৬০টি পরীক্ষা-নীরিক্ষা। এই সেবা গ্রহণ করছেন প্রতিদিন ৩২০-৩৫০ জন রোগী। চক্ষু, নাক, কানের পরীক্ষা, লেজার থেরাপি, পায়ূপথের টিউমার শনাক্ত ও তা অপারেশনও করা হচ্ছে নিয়মিত। বিভিন্ন নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল এসিস্টেন্ট, ম্যাটস, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, বিএসসি নার্সিংসহ সরকারি-বেসরকারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকেও ছাত্র-ছাত্রী এখানে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক থাকায় হাসপাতালটির পাশে থাকা আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানে ইর্ন্টানিশিপ করতে পারছেন।
হাসপাতালটিতে কর্মরত আছেন- ৩৯৬জন কর্মকর্তা ও কর্মচারি। যা প্রয়োজনের মাত্র ৪০ শতাংশ। কর্তৃপক্ষ বলছে- জনবল বৃদ্ধির ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। শিগগিরই নতুন জনবল নিয়োগ পাবে।
জনবল নিয়োগ ছাড়াও কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে- ক্যান্সার থেরাপি মেশিন, অ্যান্ডোক্রাইনোলজি, নিউরো মেডিসিন, হেমাটোলজি, ফিজিক্যাল মেডিসিন, মনোরোগ বিষয়ে যেন চিকিৎসা প্রদান করা যায়। এছাড়া ট্রমা সেন্টার, নার্সিং ইনস্টিটিউট নির্মাণ করে যেন হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গতা আনা হয়। সম্পাদনা: এনামুল হক