ডেস্ক রিপোর্ট: ঢাকার মোহাম্মদপুরে কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই নিহতের একজন সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুলকে প্রায় নয় মাস আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করছেন স্বজনরা। বিডিনিউজ
সাদ্দাম হোসেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ এলাকার তাজু আলম ওরফে আলম জলার ছেলে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে টেলিভিশনে ছবি দেখে ছেলেকে শনাক্ত করেন তাজু আলম। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন গুলশান হামলার ‘অন্যতম হোতা’ নব্য জেএমবির নেতা নুরুল ইসলাম ওরফে মারজান এবং উত্তরবঙ্গে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিসহ বেশ কয়েকটি হত্যাকা-ের অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি সাদ্দাম হোসেন। সাদ্দামের বাবা তাজু আলম বলেন, গত বছরের ১৪ এপ্রিল রাতে সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাদ্দামকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তার স্ত্রী ফারজানা বেগম আমাকে খবরটি জানায়। পরদিন সকালে সুন্দরগঞ্জে ছুটে যাই। সুন্দরগঞ্জ থানায় খবর নিতে গেলে পুলিশ সাদ্দামকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি অস্বীকার করে।’সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান বলেন, “সাদ্দামকে কারা তুলে নিয়ে গেছে জানি না। আমরা তাকে তুলে আনিনি।”তাজু আলম জানান, সাদ্দামকে তুলে নেওয়ার তিনমাস পর তার স্ত্রীর প্রথম ছেলে হয়। সন্তান হওয়ার পর থেকে সাদ্দামের স্ত্রী-সন্তানসহ তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন কোথায় চলে গেছে তা জানন না তিনি। তাজু আরও জানান, ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে পঞ্চম সাদ্দাম ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ছাত্র ছিলেন। বাড়ি থেকে কলেজ যাতায়াত করতেন। লেখাপড়া করা অবস্থায় ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর বিয়ে করেন। কুড়িগ্রামের রাজারহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিম উদ্দিন বলেন, গত বছরের ২৭ জুলাই ঢাকার কল্যাণপুরে পুলিশের অভিযানে নিহতের নয় জঙ্গির মধ্যে একজন প্রশিক্ষক রায়হান কবীর ওরফে তারেকের হাতেই জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সাদ্দাম। রায়হানের বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টাঙ্গাইল পাড়ায়। বিভিন্ন সময়ে সাদ্দাম রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় জেএমবির জঙ্গি কর্মকা- চালিয়ে আসছিলেন। পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সাদ্দাম হোসেন ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে ৬৬ বছর বয়সী জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে গুলি করে হত্যা, ১০ নভেম্বর রাতে কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের চৈতার মোড়ে মাজার শরীফের খাদেম রহমত আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা এবং একই বছরের ৮ নভেম্বর দিনেদপুরে বাহাই সম্প্রদায়ের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ও রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) রুহুল আমীনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।