![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)
গুলশান হামলায় নিহতদের ছবি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয় মারজান
আজাদ হোসেন সুমন: মারজান দেশেই আত্মগোপন করে ছিল। এই জঙ্গি মাস্টারমাইন্ড অবশেষে পুলিশের কাউন্টার অ্যাটাকে নিহত হয়েছে। গুলশান হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড নুরুল ইসলাম মারজান কোথায় তা ধোঁয়াশার মধ্যে ছিল সংশ্লিষ্ট সবাই। গতকাল নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে সব জল্পনার অবসান হলো বলে অপরাধ বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সূত্র জানায়, ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্তের এক পর্যায়ে মাস্টারমাইন্ড মারজানের বিষয়টি সামনে আসে। এরপর ঢাকা মহানগর পুলিশের হ্যালো সিটি অ্যাপসে মারজানের ছবি দেওয়া হলে তার পরিচয় ও ব্যাকগ্রাউন্ড বেরিয়ে আসে। তার বাড়ি পাবনায় এবং সে চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। দেশের আনাচে কানাচে সোর্স নিয়োগ করা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে মেজর জিয়া ও মারজান দেশেই আছে। তারা দেশের বাইরে যেতে পারেনি। এর কিছুদিন পর পুলিশ মারজান ও মেজর জিয়ার অবস্থানের সংবাদ পায়। পুলিশ চার দিক থেকে ওই ডেরা ঘিরে ফেলে। কিন্তু তার কিছুক্ষণ আগে তারা সেখান থেকে কেটে পড়ে। এভাবে একাধিকবার অল্পের জন্য পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গেছে মেজর জিয়া ও মারজান। হলি আর্টিজানে হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৪৩ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। মাস্টারমাইন্ড রিগ্যান, মেজর জিয়া ও মারজান ছিল পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড। তামিম ও মেজর জাহিদ নিহত হওয়ার পর পুলিশ চাইছিল মেজর জিয়া, মারজানকে ধরতে। গতকাল রাতে মারজান মিশন শেষ। এখন পুলিশের মূল টার্গেট হচ্ছেÑ জঙ্গি মাস্টারমাইন্ড মেজর জিয়া। গুলশান হামলার ঘটনায় চাকরিচ্যুত সেনাকর্মকর্তা জিয়াউল হক, তামিম চৌধুরী ও মারজান ছাড়া আরও সাত-আট জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা দেশের ভেতরেই আছে। তবে তাদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি, ছবিও পাওয়া যায়নি। গুলশান হামলার ঘটনায় মারজানের দায়িত্ব সম্পর্কে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মারজানকে গ্রেফতার করলে এ ব্যাপারে জানা যাবে। পুলিশ জানিয়েছে, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার সময় জেএমবির মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী পাঁচ হামলাকারীকে নিয়ে গুলশানে যান। তামিমের সঙ্গে মারজানও ছিলেন। এরপর পাঁচজনের গ্রুপটি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে হেঁটে হলি আর্টিজানে প্রবেশ করে। তখন মারজান কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় চলে আসেন। গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর জঙ্গিরা গোপন অ্যাপসের মাধ্যমে যে ছবি বাইরে ছড়িয়ে দিয়েছিল সে ছবি মারজানের কাছে এসেছিল। তিনি ওই লিংক ওপেন করেছিলেন। মারজান জেএমবি থেকে দেওয়া সাংগঠনিক নাম। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া এক জঙ্গির মোবাইল থেকে মারজানের ছবিটি সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই জেএমবি সদস্য পুলিশকে জানিয়েছে, মারজান নামেই জঙ্গি সংগঠনে তার পরিচয়। জেএমবির প্রচার বিভাগের দায়িত্বে ছিল মারজান। গুলশান হামলার পর জঙ্গিরা যে নাশকতার ছবি পাঠিয়েছিল, তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ ছিল তার। জঙ্গিদের সঙ্গে অ্যাপসের মাধ্যমে তিনি কথাও বলেছিলেন। হলি আর্টিজানের নাশকতার ভেতরের ছবি মারজানের কাছে পাঠানোর পর তার প্রশংসা করেছিল মারজান। গোয়েন্দারা জানান, মারজান কল্যাণপুর বসে পুরো গুলশানের হামলাটি মনিটরিং করেন। তবে হামলার পর কল্যাণপুরে তিনি আর অবস্থান করেননি। জেএমবির অন্য সদস্যদের কাউন্সিলিংও করাতেন মারজান। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম
![](https://amaderorthoneeti.com/new/wp-content/themes/amader-orthoneeti/img/sky.jpg)