লাভের মুখে যমুনা সার কারখানা, সংকটে দক্ষ জনবল
পরমানন্দ ভৌমিক,সরিষাবাড়ী(জামালপুর) : যমুনা সারকারখানার উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছে কারখানাটি। উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে দক্ষ জনবল সংকটেও রয়েছে বলে জানা গেছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থা(বিসিআইসি) এর অত্যাধুনিক উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন এশিয়া মহাদেশের অন্যতম দানাদার ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানী লিমিটেড। এটি জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে যমুনা নদীর পূর্ব তীরে প্রায় ২০০শত একর ভূমির উপর অবস্থিত। কারখানাটির প্রাক্কলিত ব্যয় বৈদেশিক মুদ্রা-৯২০১৮.৪০ ও স্থানীয় মুদ্রা-৩১৭০৫.৯০ লা টাকা,মোট ১২৩৭২৪.৩০ লাখ টাকা।এর অর্থ যোগানকারী সংস্থা জেবিআইসি(ওইসিএফ),জাপান ও বাংলাদেশ সরকার/বিসিআইসি।কারখানার কাঁচামাল প্রাকৃতিক গ্যাস প্রাপ্তিতে তিতাস গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ৩৭০ পিএসআইজি চাপে দৈনিক ৪৬.০ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহ’র চুক্তি করা হয়।ওই চুক্তি’র ভিক্তিতে ১৯৯১ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক এবং ১৯৯২ইং সালে ১লা জুলাই থেকে দৈনিক ১৭’শ মে.টন ইউরিয়া সার ও বাৎসরিক ৫লাখ ৬১ হাজার মে.টন সার এবং দৈনিক ১০৭৮মে.টন ও বাৎসরিক ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৭ শত ৪০ মে.টন এ্যামোনিয়া উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে বাণিজ্যকভাবে উৎপাদন শুরু করে।
কারখানার উৎপাদিত সার ১৯৯২ সালে প্রতি মে.টন সারের বিক্রিয় মূল্য ৪ হাজার ৮শ টাকা নির্ধারন করে সরকার। ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরে কারখানার উৎপাদিত সারের বাজার মূল্য সরকারী সিদ্ধান্তে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করলে লাভের মুখ দেখে কারখানাটি। কারখানাটিতে কর্মরত রয়েছে-৮৯৪ জন,পে-রোল /লিয়েন/ পি আর এল ১৯ জন সহ সর্বমোট ৯১৩ জন। এ ছাডাও কর্মক্ষম হয়েছে এলাকার হাজার হাজার মানুষ। জেএফসিএল সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-২০১১অর্থ বছর গ্যাস সংকটে সার উৎপাদন ভয়াবহ রূপধারন করে। এক পর্যায়ে সরকারী সিদ্ধান্তে গ্যাস প্রত্যাহার ও গ্যাসের চাপ কম থাকায় এবং যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১৯২দিন কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকে। অবশিষ্ট ১৭৩দিন গ্যাসের চাপ কম খাকার ফলে নির্ধারিত লক্ষমাত্রা ৩৩০০০০ মে. টন এবং সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮৯০০০ মে. টন। গ্যাস স্বল্পতায় উৎপাদন হয় ১৬৩৯০৭ মেঃ টন। ২০১১-১২ অর্থবছরের প্রথম দিকে গ্যাস সংকটে যমুনা সার কারখানার উৎপাদন প্রায় দুইমাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সময়োপযোগী নির্দেশনায় অর্থবছরের পরবর্তী ১০ মাসে এ কারখানায় লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ ৩৫ হাজার মে. টনের স্থলে তিন লাখ ২৭ হাজার ৫১২ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়। বেশি উৎপাদিত হয় ৯২হাজার ৫১২ মেঃটন সার। যার বাজার মূল্য প্রতি মে.টন ১৮ হাজার টাকা দরে ১৬৬ কোটি ৫২ লাখ ১৬ হাজার টাকা লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে লক্ষমাত্রা ছিল ৩৮০০০০ মেঃটন অর্জিত হয় ১৮৬২৮৭ মেঃটন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয় ১,৯৩.৭১৩ মে. টন। ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ অর্জিত হয় ৩৬০৩০৯ মে. টন । কম উৎপাদন হয় ৪৯৬৯১ মে.টন। ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে লক্ষ্য মাত্রা ৪ লাখের স্থলে ৪,৭৪৭৭৭ মে.টন বেশি ৭৪৭৭৭ মেঃ টন বেশি উৎপাদন হয়।যার বাজার মূল্য প্রতি মেঃটন ১৪ হাজার টাকা দরে ১০৪কোটি ৬৮ লাখ৭৮ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়।