জাফর আহমদ: ইসলামী ব্যাংকের বিগত ১০ থেকে ১৫ বছরের সন্দেহভাজন লেনদেন নিরপেক্ষ অডিট ফার্মের মাধ্যমে তদন্ত করবে নবনিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদ। পাশাপাশি জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে শুধুমাত্র একটি শ্রেণি প্রাধান্য না রেখে এখন সকল ধর্ম,বর্ণ, গোষ্ঠী নির্বিশেষ মেধার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ করা হবে।
গতকাল মতিঝিলস্থ ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান আরাস্তু খান সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ, পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল মতিনসহ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরাস্তু খান বলেন, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের পছন্দে ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন হয়েছে। তবে ইসলামী রীতি ও শরীয়াহ ভিত্তিতে আগে যেভাবে পরিচালনা করা হতো এখনও সেভাবে পরিচালনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে নীতির কোনো পরিবর্তন হবে না। অর্থায়নের ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়নে সরকারের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে অর্থায়নের ক্ষেত্রে এ সব বিষয় বিবেচনায় রাখবে। সিএসআর খরচের ক্ষেত্রে শতভাগ ন্যায়-নিষ্ঠ নীতি অনুসরণ করা হবে বলেও জানান তিনি। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের সক্ষমতার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেবেন বলে তিনি জানান।
জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, আগে একটি গোষ্ঠী সুবিধা ভোগ করতো। হিন্দু উদ্যোক্তারা ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তাদের মুনাফার অংশ যদি ব্যাংক নিতে পারে তাহলে কেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ব্যাংকের কর্মী হিসাবে নিয়োগ পাবে না? তিনি পরিচালনা পরিষদে নারী কর্মী নিয়োগ ও পরিচালনা পরিষদে নারীরদের সমান অধিকার দেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে পুরাতন কর্মীদের চাকরির কোনো সমস্যা নেই। ব্যাংকের সাথে যুক্ত থাকা একটি বিশেষ দলের অনুসারী ব্যাংককর্মীদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, এখন ব্যাংকের কারও চাকরি যাবে না। তবে গাড়িতে বোমা মারা হলে এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়লে ‘লাভ’ লেটার ধরিয়ে বরখাস্ত করা হবে।
ইসলামী ব্যাংক একটি ইসলামী দলের রাজনীতির আখড়াতে পরিণত করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। তিনি বলেন, একটি বিশেষ ব্যক্তি ও জেলার লোক প্রধান কার্যালয়ে প্রাধান্য পেতো। গত ৮ মাসে এই অবস্থা ভাঙ্গার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন থেকে ন্যায়-নিষ্ঠার এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে একটি লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি হস্তান্তর করা হয়। এ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকের সার্বিক সাফল্য তুলে ধরা হয়। ব্যাংকটির রেমিটেন্স আহরণ, বিনিয়োগ ও আমানত সংগ্রহসহ বিভিন্ন অর্জনের ধারাবাহিকতার সাফল্য অব্যাহত থাকবে।