নিজস্ব প্রতিবেদক: রাডার কেনায় দুর্নীতির অভিযোগে এরশাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ৩১ মার্চের মধ্যে এরশাদের রাডার মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
রোববার প্রধান বিচারপতি এ কে সিনহার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। রাষ্ট্রপতি থাকার সময় এইচ এম এরশাদের সময় রাডার কেনায় দুর্নীতি নিয়ে এ মামলার সাক্ষী পরীক্ষা-নীরিক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান বলেন, এই আদেশের ফলে রাডার দুর্নীতি ক্রয় সংক্রান্ত মামলা নিম্ন আদালতে স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর এই মামলায় দুদককে সাক্ষীদের পরীক্ষা-নীরিক্ষার অনুমতি দিয়ে ৩১ মার্চের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই আদেশ চেম্বার আদালতও বহাল রেখে মামলার শুনানির জন্য নিয়মিত আপিল বেঞ্চে পাঠান।
পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে এই মামলার আসামি বিমান বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান সুলতান মাহমুদ আবেদনও করেন। এই মামলা ও আবেদনের নিষ্পত্তি করেই আপিল বিভাগ রোববার এ রায় দেয়।
বর্তমানে এরশাদ এই মামলায় স্বশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার দায় থেকে মুক্ত। মামলার ধার্য তারিখে তার আইনজীবীই তার পক্ষে হাজির থাকেন। এই মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। মামলাটি যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।
১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করে। ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কম্পানির অত্যাধুনিক রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিন কোম্পানির রাডার কেনেন। এতে রাষ্ট্রের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়। তদন্ত শেষে ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে এরশাদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত থাকে। মামলা হওয়ার ১৮ বছর পর ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হয় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ। ২০১৪ সালের ১৫ মে এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন এরশাদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখিত বক্তব্য দেন।
সেদিন অন্য দুই আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক দুই শীর্ষ কর্মকর্তা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সুলতান মাহমুদও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দেন। অন্য আসামি এ কে এম মুসা শুরু থেকেই পলাতক।