সরকারের নির্দেশের পরও বন্ধ হয়নি পর্নো সাইট
জি আর পারভেজ: বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে পর্নো সাইট বন্ধের নির্দেশ পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না। ফলে তরুণরা অবাধে সাইটগুলোতে প্রবেশ করে তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটাচ্ছে। এর আগে ১০০টি পর্নো সাইট বন্ধ করে দেয় সরকার।
সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেশে সকল প্রকার পর্নো সাইট বন্ধ করার ঘোষণা দেন। প্রথম দফায় একশটি সাইট বন্ধ হলে নতুন করে আরও ৫৬০টি পর্নো ওয়েব সাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু‘ এর বেশিরভাগই এখনো খোলা রয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়–য়া আহমেদ নূর জানায়, ‘দেশে এখনো পর্নো সাইট বন্ধ হয়নি। বর্তমানে মোবাইল বা কম্পিউটরে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আগের মতই সহজে পর্নো সাইটগুলোতে প্রবেশ করা যাচ্ছে’। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, ওয়েব সাইট যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি রয়েছে। এই কমিটির পর্যালোচনার ভিত্তিতেই এমন নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে বিভিন্ন ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকা পাঠানোর হয়েছে। তালিকাভুক্ত সাইটগুলোর মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে পরিচালিত পর্নো সাইটগুলোই বেশি। তবে এর মধ্যে কয়েকটি বিদেশি সাইটও তালিকায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যে পদ্ধতিতে পর্নো সাইটগুলো বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটা খুব একটা কাজে দেবে না। বর্তমানে টেকনোলজির যুগে সম্পূর্ণরূপে পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ এমন কিছু ব্রাউজার রয়েছে যা দিয়ে যেকোনো ওয়েব সাইটে প্রবেশ করা যায়। বিশেষজ্ঞরা উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘সরকারি নির্দেশে যখন ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছিল, তখন ইউসি ব্রাউজার ও প্রক্সি সার্ভারের মাধ্যমে অনেকেই ফেসবুকে প্রবেশ করেছিল। অনুরূপভাবে পর্নো ওয়েবসাইটগুলোতে মানুষ ঢুকতে পারবে। কাজই শুধু পর্নো সাইট বন্ধ করে নয় পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এ সম্যসার সমাধান করা সম্ভব।’
বিটিআরসি হেড অফ মিডিয়া সচিব মো. সরওয়ার আলম বলেন , ‘আমাদের দেশে পর্নো সাইটগুলো বন্ধ করার মূল কারণ হচ্ছে, গ্রামের ছেলেরা টাকা পয়সা জমিয়ে কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে মোবাইল ফোনে টাকা দিয়ে পর্নোগ্রাফির ভিডিও ডাউনলোড করে। এতে কম বয়সী ছেলেরা যেকোনো সময় মেয়েদের উপর চড়াও হতে পারে। এতে যৌন হয়রানিসহ ধর্ষণের ঘটনা ঘটতে পারে’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব সাইট বন্ধ করেছি, সে সাইটগুলোতে মানুষের অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে খুব সহজে প্রবেশ করতে পারবে। আমরা শুধু নরমাল উপায়ে বন্ধ করলাম যার ফলে সরাসরি ওই সব সাইটগুলোতে প্রবেশ করা যাবে না কিন্তু ভারচ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিন) সফটওয়ার ও প্রক্সি সার্ভারের মাধ্যমে ওই সাইটগুলোতে প্রবেশ করা সম্ভব’। তার ভাষায়, ‘এখন যুদ্ধ হচ্ছে প্রযুক্তির। এই প্রযুক্তিকে ঘিরেই ফিউচার ক্রাইম আবর্তিত।
তিনি বলেন, ‘উন্নত দেশের মতো প্রযুক্তি আমাদের নেই। ফলে আমাদের পক্ষে সাইটগুলো পরিপূর্ণভাবে মনিটর বা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে খুব কম সময়ের মধ্যেই আমরা প্রযুক্তিগুলো দেশে আমদানি করব। তবে বিটিআরসি প্রক্সি সার্ভারের মাধ্যমে কেউ যেন পর্নো সাইটে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য মনিটরিং অব্যাহত রাখব আমরা’।
সম্পাদনা: আমিনুর রহমান তাজ