মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ১৩ হাজারের বিনিময়ে ২৬ হাজার গাছ লাগাতে হবে
আনিসুর রহমান তপন ও ফারুক আলম: তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন পাইপ লাইন বসানোর স্বার্থে ১৩ হাজার গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে সরকার। গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কে গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন বসানোর জন্য এসব গাছ কাটা হবে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, সভায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড শ্রীপুর থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন নির্মাণ করবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বন বিভাগের আওতাধীন প্রাকৃতিক ও সৃজন করা বনের ১৩ হাজার গাছ কাটা ও অপসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে। তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে প্রকল্প এলাকা সংশ্লিষ্ট এই প্রস্তাবটিতেই অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, প্রকল্প এলাকা থেকে মোট ১৩ হাজার ৩৫৬টি গাছ কাটা হবে। এর মধ্যে বিক্রিযোগ্য গাছ ৪ হাজার ১১টি, আর চারা গাছ আছে ৯ হাজার ৩৪৫টি।
জাতীয় স্বার্থে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সচিব জানান, তবে শর্ত দেওয়া হয়েছে এর বিনিময়ে তিতাস গ্যাসকে দ্বিগুণ গাছ লাগাতে হবে।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিসভার এক সদস্য এই প্রতিবেদককে জানান, গাছ কাটার অনুমতি দেয়ার সময় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৩ হাজার গাছ কাটার অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এর বিনিময়ে দেশের যে কোনো স্থানে, উপকূলীয় এলাকা বা চরাঞ্চলসহ বনায়ন করার জন্য যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে এই ১৩ হাজার গাছের বিপরীতে ২৬ হাজার গাছ লাগিয়ে দিতে হবে। শেখ হাসিনা এসময় আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকায় বা চরাঞ্চলে গাছ লাগানো হলে সৃষ্ট বনায়নের মাধ্যমে উপকূল রক্ষাসহ এসব এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশের প্রেক্ষিতে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সে পরিকল্পনা আছে। আমরা এই কাজটি করবো।
মন্ত্রিসভার সূত্র জানান, অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
এছাড়া সভায় যশোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা মোহাম্মদ ফারুকের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় মন্ত্রিসভায়। সম্পাদনা: শারমিন আজাদ