আশরাফুল নয়ন, নওগাঁ : এ বছর আবহাওয়া অনেকটা অনুকূলে থাকলেও হঠাৎ বৃষ্টিতে আলু গাছে ছত্রাকের আক্রমণে নওগাঁর কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় দফায় আবারও বৃষ্টি হওয়ার ফলে আলুর চাষ নিয়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছেন। খরচের টাকা উঠবে কিনা এ নিয়ে আশংকা করছেন কৃষকরা । কোন কীটনাশক দিয়েই এ রোগ নিরাময় করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তারা। সেজন্য লাভবান হচ্ছেন কীটনাশক কোম্পানিগুলো। আর এমন সময়ও কৃষি অফিসের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না পরামর্শের জন্য বলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, চলতি বছরে জেলায় ২৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে মান্দায় ৪ হাজার ৪শ’ হেক্টর, বদলগাছীতে ৩ হাজার ৮শ’ হেক্টর, ধামইরহাটে ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর, সদর উপজেলায় ২ হাজার ৯৭৫ হেক্টর, ও রাণীনগরে ৫৭০ হেক্টর। এছাড়া অন্য উপজেলাগুলোতেও কমবেশি আলুর চাষ হয়েছে। দেশী জাতের আলু ছাড়াও হাইব্রিড জাতের ডায়মন্ড, কার্ডিনাল এবং গ্র্যানোলা জাতের আলুর আবাদ করা হয়েছে। গত বছর ২৩ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল।
কৃষকরা জানান গত ১০-১২ দিন আগে হঠাৎ করে সামান্য বৃষ্টি কুয়াশা ও ঠান্ডায় আলুর গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হয়েছে। ছত্রাকের আক্রমণে গাছে প্রথমে সামান্য জায়গায় বাদামী রং ধারন করে তা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। একসময় গাছের কান্ডগুলো সম্পন্ন কালো রং ধারণ করে গাছ মরে যায়। কৃষি অফিসের মতে এর নাম লেড ব্লাইড রোগ আর গ্রামের ভাষায় পঁচাকানি রোগ নামে পরিচিত। কৃষি অফিস থেকে কোন ধরণের পরামর্শ না পাওয়ায় কৃষকরা কীটনাশকের দোকান থেকে দোকানীদের পরামর্শে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করছেন। এতে ছত্রাক দমনে কোন ধরনের উপকার না হলেও মাঝখানে লাভবান হচ্ছে কীটনাশক কোম্পানি। এরই মধ্যে গত ১০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় আবার হঠাৎ ভোর থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হওয়ায় আলুর জন্য ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেজন্য এ বছর আলু উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নাও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নে বেগুনজোয়ার গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, এবার ডেড় বিঘা জমিতে দেশী জাতের আলু করেছেন। বিঘা প্রতি ৮/৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর বিঘা প্রতি ৬০/১০০ মনের মতো আলু হয়। তবে যে হারে ছত্রাকের আক্রমন শুরু হয়েছে যে কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না । এর মধ্যে আবারও পরশু দিন বৃষ্টি হয়ে আরও অবস্থা খারাপ হয়েছে । ভাল না হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব গাছ মারা যাবে।
সদর উপজেলার কিত্তীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ২ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন। সম্পাদনা: তারেক