নূসরাত জাহান: আপনি কি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মনে করেন? এ শঙ্কার কথা কি অন্যদের বলেছেন? আপনি কি দেখছেন ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্র কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ঘিরে ধরছে? এসব বিষয়ের সঙ্গে যদি একমত না হন তাহলে নিশ্চিত আপনি ‘ট্রাম্প ডিরেঞ্জমেন্ট সিনড্রম (টিডিএস)’ বা ট্রাম্পের মতো মস্তিষ্কবিকৃতিতে ভুগছেন। এমনটাই মনে করছেন মার্কিন কলামিস্ট জাস্টিন রাইমন্ডো। ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা বিকারগ্রস্ত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ সংক্রান্ত তার একটি কলাম সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে প্রকাশ হয়েছে।
টিডিএস-এর ব্যাখ্যা রাইমান্ডো তার কলামে দিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশে এ রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর রোগের চিকিৎসা কারও জানা নেই। এ রোগের লক্ষণ একটু অন্যরকম বটে। শুধু রাজনৈতিক নেতা নয়, সাধারণরাও টিডিএসে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ রোগে আক্রান্তের প্রথম লক্ষণ হলো ব্যক্তি তার সঙ্গতি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। যেমনটি হয়েছে ট্রাম্পের। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ১৪০ হরফের তার প্রথম টুইট বার্তা ছিল অগ্নিগোলক। মানে এই এক বার্তা দিয়েই তিনি যেন গোটা বিশ্বকে পরিবর্তন করে ফেলেছেন।
রোগের পরবর্তী ধাপে ব্যক্তির বাস্তব জ্ঞান হারাবে। যে কথা বলেন তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। রোগ আরেকটু পরিণত হলে নিজের কথার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না তার। আবোল-তাবোল বকতে থাকেন। হুটহাট করে মেজাজ হারান। টিডিএসে আক্রান্ত ব্যক্তি সবসময় কল্পনার জগতে ভাসতে থাকেন। নিজেকে তিনি রূপকথার জগতের নায়ক মনে করেন। তার চারপাশে অশুভ শক্তি আর শয়তানে ভরা দেখতে পান। সব কিছু ভালো-মন্দ দিয়ে বিচার করেন। টিডিএসে আক্রান্তরা সব সময় ট্রাম্পের সঙ্গে হিটলারের সময়ের তুলনা করেন। আপনি যদি টিডিএস রোগীদের জিজ্ঞাসা করেনÑ কী করলে তাদের ভালো লাগবেÑ জবাবে বলবে তারা ‘স্বাভাবিক’ আছে।
ট্রাম্পের মতো মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন রিপাবলিকানরা। একইসঙ্গে এ রোগের লক্ষণ দেখা দিয়েছে রক্ষণশীলদের মধ্যেও। এজন্য ট্রাম্পের সমালোচনা করা থেকে তারা ক্রমাগতভাবে গণমাধ্যমকে চুপ থাকতে বলছেন। আর যেসব গণমাধ্যম চুপ হচ্ছে না তাদের ‘উন্মত্ত’ বলছেন। তারা কোনোভাবেই নিজেদের সমালোচনা শুনতে চান না।
ডানপন্থী ট্রাম্প সমর্থক যারা ট্রাম্প ডিরেঞ্জমেন্ট সিনড্রমে ভুগছেন তারা ভুলভাল কথা বলে এটা বোঝাতে চাইছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র হুমকির মুখে নয়। তারা সমূহ বিপদকে ‘স্বাভাবিক’ বলেই প্রচার করছেন। তবে এটা বুঝতে পারছেন না যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র আসলেই হুমকির মধ্যে রয়েছে। তারা এটা বুঝতে পারছেন না যে সমালোচনা করাই মানে ট্রাম্পের বিপক্ষে যাওয়া নয়। এটা তার এবং দেশের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতেই এ সমালোচনা করা হচ্ছে। সূত্র: অলটারনেট। এফএ। সম্পাদনা: হাসিবুল ফারুক চৌধুরী