আজাদ হোসেন সুমন: পুলিশের অভিযানে একে একে সব মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি শেষ হলেও রয়ে গেছে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের প্রধান মেজর জিয়া ও নব্য জেএমবির মুসা। এই ২ মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এরা দেশের বাইরে পালাতে পারেনি। তারা দেশের ভেতরেই আছে। কিন্তু তারা ঘনঘন অবস্থান বদল করছে। পুলিশের পাশপাশি র্যাবও এ ২ জনকে গ্রেফতারের ব্যাপারে সোর্স নিয়োগ করেছে।
সূত্র জানায়, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) আধ্যাত্মিক নেতা জসীমুদ্দিন রাহমানীকে গ্রেফতারের পর এবিটির শীর্ষ সংগঠক, সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হকের নাম জানতে পারেন গোয়েন্দারা। দেশের ব্লগার, প্রকাশক, মুক্তমনা লেখকসহ অন্তত নয়জনকে টার্গেট করে হত্যার নেপথ্যে ছিলেন মেজর জিয়া। আরও কয়েকজনকে হত্যাচেষ্টা পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। গোয়েন্দাদের ধারণা, আশপাশের দেশের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গেও তার যোগাযোগ রয়েছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার পাশাপাশি সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গুপ্তহত্যাসহ নানা পরিকল্পনার নেপথ্যে রয়েছেন তিনি। গত তিন বছরে তার তত্ত্বাবধানে এবিটির অন্তত আটটি সিøপাার সেল তৈরি হয়েছে। প্রতিটি সেলের সদস্য সংখ্যা চার থেকে পাঁচজন। অন্তত ৩০ জন দুর্ধর্ষ সিøপার কিলার জঙ্গি তৈরি করেছেন মেজর জিয়া। যাদেরকে নিজেই প্রশিক্ষণ দিতেন।
ব্লগার হত্যা ছাড়াও গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার মাস্টারমাইন্ডদের একজন হলেন এই জিয়া। অন্যদিকে তামিম ও মেজর জাহিদ নিহত হওয়ার পর মুসা নব্য জেএমবির দায়িত্ব নেয়। সে তার স্ত্রী তৃষামনি থাকাসত্ত্বেও মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলাকে বিয়ের উদ্যোগ নেয়। সম্প্রতি দক্ষিণ খানে আস্তানায় অবস্থান নিয়ে সে রাজধানীতে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। টের পেয়ে পুলিশ দক্ষিণ খানের আস্তানা ঘিরে ফেলে। সেখান থেকে ২ নারী জঙ্গি শীলা ও তৃষামনি আত্মসমর্পণ করে। আরেক নারী জঙ্গি ও জঙ্গি তানভীর কাদেরীর কিশোর ছেলে নিহত হয়। কিন্তু তার আগেই জঙ্গি মুসা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পুলিশ জানায়, মেজর জিয়া ও মুসাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেই অন্যান্য জঙ্গিরা একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে।
মূলত সেনাবাহিনীতে একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পরই ২০১২ সালে আলোচনায় আসেন মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক। অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই জিয়ার আর কোনো সন্ধান মেলেনি। জিয়াকে ধরতে সেই সময় পটুয়াখালী শহরের সবুজবাগ এলাকায় জিয়ার শ্বশুর মোখলেছুর রহমানের বাসায় দফায় দফায় অভিযান চালায় পুলিশ। রাজধানীর কয়েকটি স্থানেও জিয়ার খোঁজে চলে অভিযান। কিন্তু আজও জিয়া রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। সম্পাদনা: এনামুল হক