সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল
কিরণ সেখ: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিরোধী দলকে দায়ী করে বিভক্তি সৃষ্টি জঙ্গিবাদকে আরও প্রশ্রয় দিচ্ছে। প্রকৃত সত্য অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে। ক্রস ফায়ার, বিচার বহির্ভুত হত্যাকা-, গুম, খুন, পুলিশি হেফাজতে হত্যা, মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানি, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনীয় করে ফেলেছে। এই সবের প্রেক্ষাপটে দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিলো প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে এই সংকট চিহ্নিত করবেন এবং তা নিরসনে পথের সন্ধান দেবেন। সেটাই ছিলো তার জন্য রাষ্ট্রনায়কোচিত কাজ। তিনি তা না করে রাজনৈতিক দলগুলোকে শুধুমাত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বলেছেন। আমরা তো নির্বাচনে অংশ নিতেই চাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা হতে পারে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ একটি সহায়ক সরকার প্রয়োজন। যার অধীনে একটি নিরপেক্ষ, সাহসী, যোগ্য নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে জন্য তৈরি করতে হবে একটি লেভেল প্লিয়িং ফিল্ড একই সঙ্গে বর্তমানে যে বিরোধী দল নির্মূল করার প্রক্রিয়া চলছে তা বন্ধ করতে হবে। ‘সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সভা, মিছিল, সমাবেশ করার সমান সুযোগ দিতে হবে। গণমাধ্যমকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এক কথায় একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনীতিকে তার স্বাভাবিক চলার পথে চলতে দিতে হবে’- বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে তার ভাষণের শুরুতেই জাতিকে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোটার ভোট কেন্দ্রে যায়নি। অথচ উনি বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের কথা বলেছেন, যা সঠিক নয়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণ এমনভাবে চিত্রায়িত করেছেন যে সকল উন্নয়ন তার দুই দফার সরকারের ৮ বৎসরেই হয়েছে। অথচ অর্থনীতিকে সজীব ও সচল করে তুলেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
দেশবাসীর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে উন্নয়নের নামে বর্তমান সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করছে- মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। আইনের শাসন অনুপস্থিত। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। দেশে এখন স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। সরকারের রথি মহারথিরা গণতন্ত্রের চাইতে উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়ার নামে সকল সামাজিক চুক্তি ভঙ্গ করে জনগণকে শৃংখলিত করছে। উন্নয়নের নামে চলছে বল্গাহীন লুন্ঠন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: এনামুল হক