না.গঞ্জের সাত খুন মামলার রায় কাল স্বজনহারাদের প্রত্যাশা সর্বোচ্চ সাজা ‘ফাঁসি’
নুরুল আজিজ চৌধুরী ও সুলতান মাহমুদ, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার রায় হতে যাচ্ছে আগামী ১৬ জানুয়ারি। এই রায়ে সকল আসামির সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছেন নিহতদের পরিবার। তবে, এই রায়কে ঘিরে পরিবারগুলো আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে বলে জানা যায়। রায়কে ঘিরে যেন কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয় তাদের, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন স্বজনহারা পরিবারগুলো। তাদের অভিযোগ, সাত খুনের ঘটনায় ইতোমধ্যে বেশ ক’বার হুমকি দিয়েছে আসামি পক্ষের লোকজন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. সাখাওয়াতের প্রত্যাশা সাত খুনের মামলার সুষ্ঠু বিচার হবে। সাক্ষ্যপ্রমাণে আসামিদের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- হবে। আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। সেই আস্থা থেকেই আমার বিশ্বাস আসামিদের সর্ব্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদ-ের আদেশ দিবেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, যুক্তিতর্ক ও আসামিদের জেরাতে রাষ্ট্রপক্ষ তথা আমরা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, মামলায় অভিযুক্তরা সবাই সাতজনকে অপহরণ থেকে শুরু করে হত্যা, গুমসহ পুরো কার্যক্রমে জড়িত। আশা করছি আদালত আসামিদের মৃত্যুদ- দেবেন।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন সাত খুন মামলার পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তবে এই মামলাকে নিয়ে নাম না প্রকাশ করার শর্তে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, রায় নিয়ে আসামি পক্ষের কোনো চিন্তা নেই। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে রায়ের কপি নেওয়া। তারপর হাইকোর্টে মামলাটি নিয়ে আইনের ফাঁক ফোকরে আসামিদের জামিনে বের করে নিয়ে আসা। আসামিরা প্রকাশ্যে আসতে পারলেই এ মামলার চলমান গতি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করা সম্ভব হবে।
সাত খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার একটির বাদী সিটি কর্পোরেশনের নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, সাত খুনের পর থেকেই বিচার চাওয়ায় তাকে ও তার পরিবারের লোকজনদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে এ মামলার কার্যক্রম চালিয়েছেন তিনি। বিউটি ও তার পরিবারের প্রত্যাশা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- হবে। পাশাপাশি তিনি সরকারের কাছে তার ও পরিবারের নিরাপত্তার দাবি করেন।
মামলার অন্য বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার পালও আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করে নিরাপত্তা দাবি করেন। নিহত স্বপনের ভাই রিপন সর্ব্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের প্রত্যাশা করে বলেন, যদি কোনো কারণে আসামি পক্ষ যথার্থ শাস্তি না পায়, আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে আসে তাহলে তাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। তিনি বাদীপক্ষ ও নিহতদের স্বজনের নিরাপত্তা দাবি করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে মাত্র আট মাসেই ৩০ নভেম্বরে মামলার আইনি কার্যক্রম শেষ হয়। ১২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। সম্পাদনা: এনামুল হক