পাচক থেকে জঙ্গি শীর্ষ নেতা রাজীব গান্ধী আট দিনের রিমান্ডে
মাসুদ আলম: জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমানের জামাতা আবদুল আওয়ালের রান্না-বান্নার কাজ ও বার্তাবাহক ছিল জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী ওরফে সুভাষ ওরফে শান্ত ওরফে টাইগার ওরফে আদিল ওরফে জাহিদ। সেখান থেকে ধীরে ধীরে শীর্ষ জঙ্গি নেতায় পরিণত হয় সে। গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী রাজীব গান্ধী। শুক্রবার গভীর রাতে টাংগাইল জেলার এলেংগা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। এদিকে শনিবার রাজীব গান্ধীকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত ৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মনিরুল বলেন, নব্য জেএমবি তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন রাজীব গান্ধী। উত্তরবঙ্গের সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। তামিম চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম মারজানের সঙ্গে গুলশান হামলার পরিকল্পনায় রাজীব গান্ধী সরাসরি যুক্ত ছিলেন। গুলশান হামলা ছাড়াও কমপক্ষে ২২টি হত্যাকা-ের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজীব গান্ধী। তার মধ্যে অন্যতম জাপানী নাগরিক হোসিও কোনিও হত্যা, টাঙ্গাইলের দর্জি নিখিল হত্যা, পাবনার পুরোহিত নিত্যরঞ্জন পান্ডে হত্যা, রংপুর মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা, কুষ্টিয়ার হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার সানাউর হত্যা, পঞ্চগড়ের পুরোহিত যুগেশ্বর হত্যা, দিনাজপুরের হোমিও চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ হত্যা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যা। গুলশানে হামলা চালানোর আগে জঙ্গিরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় বসে হামলার পরিকল্পনার সময় সেখানে স্ত্রী-সন্তানসহ উপস্থিত ছিল রাজীব। হামলার দিন বসুন্ধরা বাসা থেকে পরিবারসহ মিরপুরে চলে যায় রাজীব। গুলশান হামলার পর সে ঢাকাতেই অবস্থান করছিল, কল্যাণপুরের আস্তানায় অভিযানের পর যখন রাজীবের নাম আসে তখন সে গা ঢাকা দেয়। গুলশান হামলায় পরিকল্পনাকারী হিসেবে যাদের চিহ্নিত করেছিল পুলিশ, তাদের একজন ‘রাজীব গান্ধী’ জীবিত অবস্থায় ধরা পড়েছেন। রাজীবের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য গুলশান হামলাসহ অন্যান্য হামলার ঘটনা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন মনিরুল। তিনি বলেন, গুলশান হামলায় জড়িত শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওরফে বিকাশ ও খায়রুল ইসলাম পায়েল ওরফে বাধনকে জঙ্গি কর্মকা-ে রাজীবই সম্পৃক্ত করে এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেয়। এই দুজনই পুলিশি অভিযানে নিহত হয়। এছাড়া শোলাকিয়ার হামলায় গ্রেফতার শফিউলকেও জঙ্গি কর্মকা-ে সে সম্পৃক্ত করে। পরে বন্দুকযুদ্ধে শফিউলও নিহত হয়। সম্পাদনা: এনামুল হক