বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক চেতনা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেব না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এস.ইসলাম জয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে কখনো সাম্প্রদায়িক চেতনা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেব না। এখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোনো জায়গা নেই। জঙ্গিদের আমরা করেছি এবং বাকিদেরও করা হবে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে সবার বসবাস নিশ্চিত করব। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সকল ধর্মের প্রধানদের নিয়ে একটি প্লাটফর্ম করেছি। যাতে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করা যায়। কেননা কোনো ধর্মই অনৈতিকতার শিক্ষা দেয় না।
গতকাল রামকৃষ্ণ মন্দিরে যুব সমাজের নৈতিক মূল্যবোধ উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘সমাজে মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,জঙ্গি অর্থায়নদাতাদেরও জঙ্গিদের মতো পরিণতি ভোগ করতে হবে। কোনোভাবেই তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রীর নের্তৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। সকলের সহাবস্থান ও স্বাধীনভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের কথা উল্লেখ করে বলেন, হিন্দুরা এ বছর ২৯ হাজারেরও বেশি জায়গায় নির্বিঘেœ দুর্গাপূঁজার অনুষ্ঠান পালন করেছে। এছাড়া এবারই ইজতেমায় সবচেয়ে বেশি দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আপনারা যে ধর্মেরই হোন না কেন,সবাই নিজেদের ধর্ম নিজেদের মতো পালন করেন। প্রত্যেকটি ধর্মেই মানুষের কল্যাণের কথা বলা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এখানে না আসলে আমি হয়তো জানতামই না, আমাদের নীতি-নৈতিকতার কতটা অভাব । যুবকদের নীতি-নৈতিকতার যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। এখন কোথায় যেন তারা থমকে যায়। আমাদের শিক্ষিত মানুষগুলো কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে? সারা পৃথিবী যেন হানাহানিতে লিপ্ত। তবে আমরা দেশকে চলমান অগ্রধারায় এগিয়ে নিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠন করতে চাই। সেজন্য সকলের সম্পৃক্ততা জরুরি। সামাজিক অবক্ষয়ের কথা বলতে তিনি বলেন,আমি যখন ছোট ছিলাম তখন দেখেছি, পাড়ার হিন্দু-মুসলিমসহ সকল ধারার লোকজন একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসতো। কোনো পরিবারের বিপদ হলে তারা একে অপরের পাশে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসতো। কিন্তু এখন কেউ কারও পাশে দাঁড়ায় না। যেন কেউ কাউকে চিনেই না। কারও সাথে কারও যোগাযোগ নেই। এমনকি পরিবারের বন্ধনও ভাঙনের পথে। যার কারণে সমাজে যুবকদের মাঝে হতাশা দেখা যায়। যুবকরা সহজে বিপদগামী হয়। যে কারণে পঞ্চগড়ের ইস্কান মন্দিরে পুরোহিত হত্যা করতে দেখলাম। গুলশান, নাসিরনগর, নেভী মসজিদের মতো জঙ্গি হামলা দেখতে হলো। নীতি-নৈতিকতায় কোথায় যেন অভাব অনুভূত করছি। তবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরা সন্ত্রাসীদের, জঙ্গিদের ছাড় দিচ্ছি না। জনগণ আমাদের সাথে আছে। জঙ্গিদের নির্মূলে জনগণ আমাদের সহায়তা করেছে। সব পরিস্থিতিই আমরা চরম ধৈর্য্যরে সাথে মোকাবিলা করছি।
মন্ত্রীসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, স্বামী দিব্যানন্দজী মহারাজ, স্বামী শক্তিনাথানন্দজী মহারাজ প্রমুখ। সম্পাদনা: এনামুল হক