চিকিৎসক ছাড়াই চলছে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : চিকিৎসক ছাড়াই নানা সংকটে চলছে কাশিয়ানী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য একমাত্র হাসপাতালটি এখন ডাক্তার শূন্য হয়ে পড়েছে। নার্স দিয়ে চলছে রোগীদের চিকিৎসা সেবা। এতে করে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। ডাক্তার না পেয়ে প্রতিদিন বিনা চিকিৎসায় ফিরে যাচ্ছেন শত শত রোগী। এ হাসপাতাল থেকে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা উপজেলার দুই ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে এ হাসপাতাল থেকেই। হাসপাতালে কোন ডাক্তারের পোষ্টিং না থাকায় ভেঙে পড়েছে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। কাশিয়ানী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী হাসপাতালে চিকিৎসকের মোট ৯টি পদ রয়েছে। যার ৯টি পদই শুন্য রয়েছে। অন্যত্র থেকে চিকিৎসক এনে কোন রকমে দায়সারা কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কোন সময়ে ডাক্তার থাকে না। জরুরী রোগী আসলে ধার করা ডাক্তারকে ডেকে আনতে হয়। অথবা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলা হয়।
এতে অধিকাংশ সময়ে রোগীর অবস্থা আরো অবনতি ঘটে। হাসপাতালে আগত রোগীরা নামে মাত্র ওষুধ পেলেও প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধ ও সেবা পায় না। জরুরী বিভাগে প্রয়োজনীয় ওষুধ, গজ, ব্যান্ডেজ, সুই-সুতা এমনকি বে¬ড পযন্ত রোগীকে বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।
৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও বাড়েনি চিকিৎসক, যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। সম্প্রসারিত নতুন ভবনে ১৯ বেড চালু করলেও পুরানো ভবনের দ্বিতীয় তলা ভেঙে ফেলায় পূর্বের ৩১টি বেড বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল শুধু নামেই চলছে।
হাসপাতলের ভিতরে-বাহিরে সব সময় ময়লার স্তুপ জমে থাকে। নোংড়া ও দূর্গন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ল্যাট্রিন গুলো সার্বক্ষনিক থাকে অপরিস্কার। হাসপাতালে নিয়োজিত সুইপার ঝাড়দাররা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে পার্ট টাইম ঝাড়ু-দার নিয়োগ দিয়ে কোন মতে কাজ চালাছেন। হাসপাতালে একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটির অবস্থাও প্রায় অচলাবস্থা। কোন মতে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে জরুরী রোগী জেলা সদর বা অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তর অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক সময় রোগীর পথেই মৃত্যু ঘটে থাকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি ল্যাবরেটরী এবং একজন দক্ষ টেকনিশিয়ান থাকলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মেডিসিনের অভাবে মাত্র দু’একটি ছোট খাটো পরীক্ষা ছাড়া আর কোন পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। এই হাসপাতালে একজন দন্ত বিশেষজ্ঞের পদ থাকলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার সীতারামপুর গ্রামের হানিফ সরদার বলেন, পায়ের সমস্যার জন্য চিকিৎসা নিতে এসেছিলাম কিন্তু ডাক্তার না পেয়ে ফিরে যাচ্ছি। সম্পাদনা : তারেক