আবারও পেছাতে পারে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: আবারও পেছাতে পারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর। আসছে ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও এই সফরকে ঘিরে আলোচনা এবং প্রস্তুতি সম্পন্ন। ইতোমধ্যে এই সফরে দুই দেশের মধ্যকার সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির বিষয়ে মন্ত্রী ও সচিব পর্যায়ের বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে।
ভারতের পক্ষ থেকে আলোচিত চুক্তিগুলোর মধ্যে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি নেই। ফলে গত ডিসেম্বরের মতো ফেব্রুয়ারির সফরও পিছিয়ে যেতে পারে বলে দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।
সূত্র মতে, ভারতের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার সফরে ৪১টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির আলোচ্যসূচি রাখা হয়েছে। গত ৪ জানুয়ারি ভারতের পক্ষ থেকে আসা এসব প্রস্তাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক। ওই বৈঠকে ৩৬টি বিষয়ে একমত পোষণ করে বাংলাদেশ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে বাংলাদেশ, রাশিয়া ও ভারতের ত্রিপক্ষীয় সমঝোতাসহ ৪টি বিষয়ে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেনি। ভারতের পক্ষ থেকে দেওয়া ওই ৪১ চুক্তির মধ্যে তিস্তার কথা নেই। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত, তিস্তার বিষয় আলোচ্যসূচিতে না এলে এই সফর প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিব্রতকর। প্রয়োজনে সফর আবারও পিছিয়ে দেওয়া হবে। তবে ভারত সফরে এবার তিস্তার বিষয় থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার ভারত সফরের দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও তিস্তা ইস্যুতে সফর পিছিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, তিস্তা বিষয়ে মোদি ইতিবাচক। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে আলোচনা সম্পন্ন না হওয়ায় তিস্তায় একটু সময় লাগবে বলে জানানো হয়। এরপরই সফরের শিডিউল পরিবর্তন করে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে নেওয়া হয়। কিন্তু এবারও তিস্তা নিয়ে দিল্লির গড়িমসি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রের দাবি, তিস্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। এর জট না খুললে আবারও পেছাতে পারে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের প্রস্তুতি নেওয়া আছে। সিডিউল জটিলতার কারণে ডিসেম্বরে সফরটি হয়নি। মাহমুদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর, যথাসময়ে সফরসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর হতে পারে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ্বে।
জানা গেছে, এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর তিস্তা চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় গত দিনক্ষণ অনানুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত থাকলেও শেষ পর্যন্ত ওই সফর স্থগিত রাখা হয়। ওই সফর স্থগিতের পর গত ১১ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর আন্তর্জাতিক অভিবাসী সম্মেলনে ঢাকা সফরে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং ফেব্রুয়ারিতে সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর শিডিউল চান। আকবর বলেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন শেখ হাসিনার জন্য। তাকে সংবর্ধনা দিতে তার সরকার প্রস্তুত। জনগণও এই সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী