রোহিঙ্গা গ্রামে প্রবেশের অনুমতি পেলেন না জাতিসংঘের দূত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংগি লিকে রাখাইন প্রদেশের কিছু গ্রামে প্রবেশ করতে দেয়নি মিয়ানমার। দেশটির সরকারের দাবি নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা থাকায় এসব গ্রামে তাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিপীড়ন ও গণহত্যার বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ছিল। সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনও সরকারি ব্যতিত কোনও সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রবিবার জাতিসংঘের বিশেষ দূতকে কিছু এলাকায় নিয়ে যায় কর্তৃপক্ষ।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইয়াংগি লিকে সরকার অনুমোদিত কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়।
১২ দিনের মিয়ানমার সফরে রয়েছেন লি। এর মধ্যে রাখাইনে লি তিনদিন অবস্থান করছেন। রোহিঙ্গা গ্রাম ছাড়াও তিনি অক্টোবরে হামলার শিকার হওয়ার বর্ডার পোস্টও পরিদর্শন করেন। স্থানীয় একটি কারাগারও পরিদর্শন করেন তিনি। গত শুক্রবার লি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার পার্শ্ববর্তী শহর সিতের স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এদিকে, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সংস্থা অর্গানাইজেশন অব দ্য ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মন্ত্রীদের বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) মালয়েশিয়ার কুয়ালা লামপুরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবস্থা পর্যালোচনা করা হবে। উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া।জাতিসংঘের মতে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী কর্মকা-ের রাখাইন রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন। এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। মিয়ানমারে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাস করে। কিন্তু, সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা তাদেরকে দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার তো করেই না বরং এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করে থাকে।
রাখাইন রাজ্যে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরেও চলমান দমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করে দায় এড়াতে চাইছে দেশটির সরকার। রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে বলেও দাবি করছে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিশ্চিত করেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেই চেনে। জাতিসংঘের অবস্থানও আলসম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ