ক্যাম্পাস ছেড়ে রাস্তায় ইউএসটিসির শিক্ষার্থীরা
শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধনের দাবিতে এবার রাস্তায় নামলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) এমবিবিএস শ্রেণির তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এর আগে রোববার আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসের ভেতর মিছিল করার মাধ্যমে তাদের আন্দোলন শুরু করেন। এরপর গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রথমে ইউএসটিসির মূল ফটক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। পরে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসের সামনের জাকির হোসেন সড়ক অবরোধ করেন মিছিল ও শ্লোগান দেন এবং ইউএসটিসির বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য সচিব নীনা ইসলামের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। পরে পুলিশের ঊর্ধতন কর্তকর্তারা এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য বলেন। এরপর শিক্ষার্থীরা মূল সড়ক থেকে সরে আসলেও ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান করে শ্লোগান দিতে থাকেন। খুলশী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শংকর কান্তি দাশ বলেন, এমবিবিএস কোর্সে কোটার চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। তারা ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক অবরোধ করলে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে ক্যাম্পাসসহ এর আশে পাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ ২৫তম ব্যাচের চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করেছে। ২৩ জানুয়ারি থেকে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা স্থগিত করার কথা স্বীকার করেন ইউএসটিসির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক বদরুল আমিন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনের বিষয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে। ইউএসটিসি সূত্রে জানা গেছে, বিএমডিসি নিবন্ধনের দাবিতে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএসে ভর্তি হওয়া ২৫তম ব্যাচ, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ২৬তম ব্যাচ ও ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকদিন থেকে ইউএসটিসি ক্যাম্পাসে আন্দোলন করে আসছেন। গত বুধবার থেকে বিএমডিসি নিবন্ধনের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার মিছিল ও অবরোধের মাধ্যমে মূল আন্দোলন শুরু করেন তারা। তারা প্রথমে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সামনে মিছিল নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফিরে এসে দুপুরে ক্যাম্পাসের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপালসহ ১৪টি দেশের শিক্ষার্থী রয়েছেন। বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিংহভাগ ভারতের। ২৫তম ব্যাচের ভারতীয় শিক্ষার্থী আরাফাত রাশিদ বলেন, বিএমডিসির নিবন্ধন ছাড়া তাঁদের পড়ালেখার কোনো মূল্য নেই। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তারা দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বিভিন্নভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। নিবন্ধন না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা। এ বিষয়ে চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার বলেন, ‘এটা শুধু ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সমস্যা নয়। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের অধ্যয়নরত সব শিক্ষার্থীর সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। উপাচার্য ঢাকায় আছেন এ বিষয়টি নিয়ে। তারা একটি সমাধান বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।