তানজিনুল হক, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহম্মেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাইকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে বহিষ্কার করার ওই সুপারিশে এখন কেন্দ্রের অনুমোদন প্রয়োজন।
গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত অপর তিন ভাই হলেন- শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা এবং টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদুর রহমান খান কাকন। তাদেরকে বহিষ্কারের পর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরে আনন্দ মিছিল বের করে।
সোমবার দুপুরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুকের সভাপতিত্বে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহম্মেদ হত্যা ও সম্প্রতি ঘাটাইলের ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রুবেলকে হত্যার উদ্দেশে বর্বরোচিত হামলাসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয় বলে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের।
তিনি জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভায় এমপি রানাসহ তার চারভাইকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্যে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কেন্দ্র অনুমোদন দিলে তা কার্যকর হবে।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ চারভাইকে বহিষ্কারের পর স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহত ফারুক আহম্মদের স্ত্রী নাহার আহম্মেদ। এ সময় তিনি স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী, মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহম্মেদকে হত্যা করে শহরের কলেজ পাড়ায় তার বাসার সামনে ফেলে রাখা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাহার আহম্মেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দীর্ঘদিন তদন্তের পর সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ চার ভাইয়ের নাম উঠে আসে। পরে এমপি রানাকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়াও তার তিনভাইসহ ১৪ জনকে আাসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ মামলায় বর্তমানে এমপি রানা জেল হাজতে রয়েছেন। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী