টেস্ট জিতল নিউজিল্যান্ড, গর্বহীন রেকর্ড বাংলাদেশের
স্কোর : বাংলাদেশ-৫৯৫ ডি. ও ১৬০, নিউজিল্যান্ড- ৫৩৯ ও ২১৭/৩, নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী
এল আর বাদল: বাংলাদেশের পরাজয়ের কারণ হিসেবে টাইগার দলপতি মুশফিকুর রহিম দোষ চাপালেন বোলারদের উপর। তার সতীর্থ ব্যাটসম্যানরা যে উইকেটে যাওয়া আসার মিছিলে ব্যস্ত ছিলেন, সেটা এড়িয়ে গিয়ে বোলারদের ব্যর্থতাকে তুলে ধরলেন বিশ্বের কাছে। প্রথম ইনিংসে ৫৬ রানের লিড পাওয়া বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা গতকাল শেষ দিনে মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াতেই পারেনি। ক্রিকেট বিশ্বের সবাই অনুমান করেছিল পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ অন্তত ২৫০ রান করে
ব্যাটিং শেষ করবে। আর নিউজিল্যান্ড ৩০৬ রান টপকে জয়ের বন্দরে পৌঁছানোর সময় পাবে না। টেস্ট ড্র-ই মানবে দুই দল। কল্পনা আর বাস্তব যে কতটা ফারাক, সেটা দেখিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ২১৭ রানের লক্ষ্য অনায়াসে পূরণ করে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পায় কিউইরা। ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫৯৫ রান করে বাংলাদেশের ইনিংস ঘোষণার পরও হেরে যাওয়া সাকিব-তামিমদের জন্য চরম হতাশারই। টেস্টে প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান করে হারের রেকর্ড যে এটাই। বাংলাদেশ ভেঙে দিল ১২২ বছর পুরনো রেকর্ড। যে রেকর্ড ভাঙায় গর্ব নেই, আছে বিস্তর হতাশা। টেস্টে প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান করে হারের রেকর্ডটি ছিল সেই ১৮৯৪ সালের। সিডনিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৮৬ রান করেও হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে তখন ছিল ‘টাইমলেস’ টেস্টের যুগ, ৭ দিন ধরে চলতো সে টেস্ট। সেদিক থেকে হেরে গিয়ে বাংলাদেশ ভারমুক্ত করল পাকিস্তানকে। পাঁচ দিনের টেস্টে সবচেয়ে বড় প্রথম ইনিংসে হারের রেকর্ডটি এত দিন তাদেরই ছিল। সেটিও অবশ্য আজকের ঘটনা নয়। ১৯৭২ সালে মেলবোর্নে ৮ উইকেটে ৫৭৪ রান করে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল তারা। তবে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ম্যাচটি হেরে গিয়েছিল ৯২ রানে।
গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর বোলাররাও পারেননি লড়াই করতে। তাই সেই হারের বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি লাল-সবুজের দেশ। সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ টাইগার দলপতির। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ৫৯৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করেও ওয়েলিংটন টেস্ট চোঁখ বুজে নিউজিল্যান্ডের জয়। এর আগে টেস্ট ইতিহাসে প্রথম ইনিংসে এত রান করে হারেনি কোনো দল। কিউইদের পক্ষে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন করেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে সুইপ করে নিজের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান তিনি। ১৫টি চারের বাউন্ডারি মারেন তিনি। সেই ওভারেই ১ রান নিয়ে দলকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন এই অধিনায়ক। আগের দিন শেষ সময়ে মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজের আউটে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। পরদিন নিজেদের উইকেট বিলিয়ে আসেন সাকিব আল হাসান, মুমিনুল হক ও সাব্বির রহমান। মুশফিকুর রহিম ও ইমরুল কায়েসের বীরত্বের পরও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ২১৬ রানের পুঁজি নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রাখেন মিরাজ। দুই বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন তিনি। কিন্তু স্বাগতিকদের সেরা দুই ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলরের দেড়শ রানের জুটি দলকে সহজ জয়ের পথে নিয়ে যায়। সম্পাদনা: এনামুল হক