ইসমাঈল হুসাইন ইমু: দেশের ৬৮টি কারাগারে কনডেম সেলে দিন কাটাচ্ছেন বিভিন্ন মামলায় ফাঁসির দ-প্রাপ্ত ১৩৩৯ আসামি। এদের সবারই নি¤œ আদালতে ফাঁসির আদেশ হয়েছে। উচ্চ আদালতে কারও কারও আপিল মামলা চলছে। আবার কোনো কোনো আসামির মামলা নি¤œ আদালতে শেষ হয়েছে। সেখানে মৃত্যুদ- দিয়ে রায় হয়েছে। তবে এখনো পূর্ণাঙ্গ রায় হয়নি। পূর্ণাঙ্গ রায় হলে তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সব মিলিয়ে এখনো সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত মামলার রায় না হওয়ার কারণে তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের বিরুদ্ধে নি¤œ আদালতের দেওয়া রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকলে সকলকেই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করা হবে। রায় বহাল না থাকলে আদালত কাউকে খালাস দিলে তারা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্তি পাবেন। আর সাজা কমলে সেই সাজা ভোগ করবেন।
কারা সূত্র জানায়, বর্তমানে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে রয়েছে ৬১৬ জন ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামি রয়েছেন। কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঐশীসহ ফাঁসির আসামি ১৭ জন। এছাড়াও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ৭ জন কাশিমপুর ১ এ ৮৫ ও কাশিমপুর ২ এ ১৩৬ জন ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন।
ফাঁসির আসামিদেরকে রাখা হয় কনডেম সেলে। যাকে এক কথায় বলা হয় কারাগারের ভেতর আরেক কারাগার। কনডেম সেলগুলো অপেক্ষাকৃত নির্জন এবং সুরক্ষিত দরজা একটাই। অন্ধকার প্রকোষ্ঠ। সেখানেই তাদের দিন কাটে। সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা তিন বেলা খাবার দেওয়ার সময় দরজা খুলে তাদের খাবার দেওয়া হয়।
কারা সদর দপ্তর সূত্র জানায়, ১৩৩৯ ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামি থাকলেও এদের সকলের ফাঁসি কার্যকর হবে না। কারণ উচ্চ আদালতে অনেকেই আপিল করেছেন। উচ্চ আদালত থেকে কেউ কেউ খালাস পেয়ে যান। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নি¤œ আদালতের রায়ই উচ্চ আদালতে বহাল থাকে। ৬৮টি কারাগারের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫টি জেলা কারাগারেই ফাঁসির আসামি রয়েছে। উচ্চ আদালতে এদের রায় বহাল থাকলে আইন ও কারাবিধি অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
কারা সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর ফাঁসিগুলোর মধ্যে ১৯৯৩ সালের ২৭ জুলাই সাংবাদিক তনয়া শারমিন রিমা হত্যাকারী মুনিরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এরপর ২০০৭ এর ২৯ মার্চ জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলা ভাইসহ ৬ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ারসহ ৫ আসামির মৃতুদ- কার্যকর করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময় যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লা, আলী আহসান মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামী ও কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী