লক্ষ্মীপুরে ভিজানো সুপারির গন্ধে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ
জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে পাকা সুপারি পানিতে ভিজিয়ে পচানোর কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে পুকুর, নালা-ডোবায় এবং খালে সুপারি পচানোর ফলে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ। ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে পানি ও পরিবেশ। সদর উপজেলার মান্দারী, জকসিন, দালাল বাজার, মিয়া রাস্তার মাথা, রায়পুর উজেলার বাসাবাড়ি, হায়দারগঞ্জ, রাখালিয়া, মাইলের মাথা এবং রামগঞ্জে দাসপাড়া, সোনাপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে পচানো হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার সুপারি। ভেজানো সুপারির ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে জেলার প্রায় দুই শতাধিক ব্যবসায়ী। আবার কোনো কোনো স্থানে দেখা যায় সুপারিতে রং ধরে রাখার জন্য ব্যবসায়ীরা সুপারিতে রং ও কেমিক্যাল ছিটাচ্ছেন। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৬ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। ওইসব বাগানে চলতি বছরে ১২ হাজার টন সুপারি উপাৎদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার দর প্রায় ৩২৫ কোটি টাকা। এখানকার উৎপাদিত সুপারির বেশির ভাগই খাল, ডোবা-পুকুরে, পানি ভর্তি পাকা হাউসে ভিজিয়ে রাখেন ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারীরা এখান থেকে কিনে নেন এবং রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ ও বিক্রি করেন তারা।
সরেজমিনে সদর উপজেলার জকসিন, মান্দারী, দালালবাজারের ইছাহাজি তেমুহনী, রানীর হাট, পালের হাট, চর রুহিতার দাসপাড়া, লাহারকান্দিসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, পুকুর-ডোবা নালায় পচানো হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার সুপারি। চলতি বছর ভেজা সুপারির ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে জেলার অন্তত দুই শতাধিক ব্যবসায়ী। তবে কিছু কিছু জায়গায় গিয়ে দেখা যায় ভেজা সুপারি বিক্রিকালে সুপারিতে রং ও কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে।
সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার ইছাহাজি তেমুহনীতে ব্যবসায়ী জামাল হোসেন, আবদুল মান্নান, পালের হাটের সাহাপুর এলাকায় লিটন কয়েক কোটি টাকার সুপারি পুকুর ও খালের পানিতে ভিজিয়েছে। এতে করে পুকুর ও খালের মাছ মরে পানি দূষিত হচ্ছে। তবে সুপারির রং ধরে রাখতে ও ভালো দামের আশায় সুপারীতে কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে বলে তারা জানান। চররুহিতা এলাকার গৃহিনী পাখি আক্তার বলেন, তিনি খালের পানিতে থালা-বাসন ও কাপড় ধোয়ার কাজ করতেন। খালের পানিতে সুপারি ভেজানোর ফলে তা অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এবং এ পানি থেকে প্রচুর গন্ধ ছড়াচ্ছে।
সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার সুপারি ব্যবসায় জামাল হোসেন জানান, তিনি এ বছর প্রায় ৩০ লাখ টাকার সুপারি পানিতে ভিজিয়েছেন। বর্তমানে পানিতে ভিজিয়ে পচানো সুপারি বিক্রি শুরু করেছেন। সুপারিতে রং মেশানো যে শরীরের ক্ষতি এই বিষয়টি তার জানা নেই। সম্পাদনা : জাহিদ হাসান