কুলাউড়ায় ৩৫টি গ্রামেই ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎলাইন!
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : কুলাউড়া উপজেলার ৩৫টি গ্রামে এক যুগ থেকে পিডিবির প্রায় ৫০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎলাইন রয়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎলাইনের কারণে গ্রামের মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সর্বশেষ ৪ বছরে এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে ১০ জন মারা গেছেন। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে অর্ধশত মানুষ। বিদ্যুৎ বিভাগ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করলেও কোনো সুফল পায়নি এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের গাজীপুর, হাসনপুর, প্রতাবী, বনগাঁও, বালিচিরি, গুতগুতি, লক্ষ্মীপুর, বনগাঁও (২), শংকরপুর, ঝিমাই পুঞ্জি, কর্মধা ইউনিয়নের হাসিমপুর, বাবনিয়া, বেরী, কোনাগাঁও, নোনা, নলডরী, মহিষমারা, কান্দীগাঁও, গুতুমপুর, রাঙ্গিছড়া বাজার, ফাড়ি বাগান, কালিটি চা-বাগানে, রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কবিরাজী, পালগ্রাম, রস্তুমপুর, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের পুরশাই গ্রামসহ প্রায় ৩৫ টি গ্রামে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন।
গত ৪ বছরে শিশুসন্তানসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পঙ্গুত্ব বরণ করছে অর্ধশত মানুষ। মৃত্যুবরণকারীদের যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন-পশ্চিম প্রতাবী গ্রামের একই পরিবারে কাশেম চৌধুরী (১২) ও কামিল চৌধুরী (৭) নাম দু’ভাই জমিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। ছেলে শোকে এখনও আর্তনাত করে বেড়াচ্ছেন তার বাবা। এছাড়া লক্ষীপুর গ্রামের সুনু মিয়া (৪৫),আইন উল্লাহর মেয়ে মুমিনা বেগম (২২), এবং কর্মধা গ্রামের হায়দর আলীর স্ত্রী আজিরুন বেগম (৩৫) ছেড়া তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ওই বিদ্যুৎ লাইনগুলো মেরামতের দাবি জানিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। যার ফলে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মাঝে। এসব গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ ও সুপারি গাছ। এসব খুটিতে বিদ্যুতের তারগুলো খুবই দুর্বল। প্রতিদিনই বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়ে আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটছে নয়তো খুঁটি ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কখনো বা দিনের পর দিনও। অনেক সময় দায়ে পড়ে এগুলো স্থানীয় গ্রাহকরা নিজেদের উদ্যোগেই সাময়িকভাবে মেরামত করে নিতে বাধ্য হন।
বাবনিয়া-হাসিমপুর নিজামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আহসান উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, এই এলাকাগুলোর বিদ্যুৎ লাইন ও খুটিগুলো রয়েছে খুবই দুর্বল। সন্ধ্যার পরে লো ভোল্টেজের কারণে লাইট মিট মিট করে জ¦লে। মৌলভীবাজার অ্যাসিসটেন্ট চিফ ইঞ্জিনিয়ার দুলাল হোসেন জানান, এলাকাবাসী একটি আবেদন করেছে। আমরা পরবর্তীতে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করা হবে। সম্পাদনা: জাহিদ হাসান