কামরুল আহসান: রোববার ভারতে এক ট্রেন দূর্ঘটনায় ৩৯ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে আরো ৫০ জন। এর আগে গত নভেম্বর মাসে কানপুরে এক ভয়াবহ দূর্ঘটনায় মারা গেছে ১৪৮ জন। কয়েক মাস পরই সেখানে ট্রেন লাইনচ্যূত হয়। ভারতের ট্রেন লাইনকে এখন বলা হচ্ছে জাতির মৃত্যুরেখা।
ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সালে ভারতে ট্রেন দূর্ঘটনায় মারা গেছে ২৭ হাজার ৫৮১ জন মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে যার সংখ্যা মাত্র ৮২৭ জন, আর যুক্তরাজ্যে ২৪ জন। কথা হচ্ছে ভারতে কেন প্রতি বছর এতো সংখ্যক লোক প্রাণ হারায় ট্রেন দূর্ঘটনায়? সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, এর আসল কারণ সত্যিই অজানা। ভারতের সাবেক রেলমন্ত্রী দিনেশ ত্রিবেদী সিএনএনকে জানিয়েছেন, ‘ভারতের রেল চলাচল পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন আনতে একটা প্রজন্মের পরিবর্তন দরকার। বর্তমান ব্যবস্থা একেবারেই ব্যবহার অযোগ্য’। ভারতে প্রতিদিন ১২ হাজার ট্রেনে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চলাচল করে। এই সংখ্যা প্রায় অস্ট্রেলিয়ার সব জনগণের সমান। ১৬৩ বছর আগে ব্রিটিশদের দ্বারা গড়ে তোলা রেলব্যবস্থা এখনো সেভাবেই চলছে, এবং এ ব্যবস্থা এখন সম্পূর্ণ অকেজো। কোনোরকম আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ আরবান এফেয়ার্স-এর প্রফেসর দেবলীনা কুন্ডু সিএননকে বলেছেন, ‘বেশির ভাগ ব্রিজ, কালভার্টই ভেঙ্গে গেছে। ট্রেনগুলোও পুরোনো, ইঞ্জিন আর টানতে পারছে না। নতুন ইঞ্জিন দরকার। সামগ্রিক ব্যবস্থাটাই অনেক পুরোনো আর অকেজো হয়ে গেছে। সেগুলোর দিকে কারো নজর নেই। সমস্যাটা শুধু ট্রেন আর ট্রেনলাইনের নয়, বরং এর ব্যবস্থাপনারও। নানারকম অবহেলার কারণেই দিন দিন ট্রেন দূর্ঘটনা বাড়ছে’। বিশাল জনসংখ্যার বিশাল দেশ ভারত, ৮ হাজার স্টেশন দিয়ে ১২ হাজার ট্রেন ১ লাখ ৪০ হাজার ব্রিজ অতিক্রম করে, সেখানে এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বজায় রাখা সত্যিই কঠিন। এর মধ্যে ৪ হাজার ৮২৩ টি আছে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন, ৫ হাজার ৬৩৩ টি আছে ডিজেলের ইঞ্জিন, আর ৪৩ টি স্টিম ইঞ্জিন এখনো চলছে। সিএনএন, সম্পাদনায়: এম রবিউল্লাহ