ঢিমেতালে চলছে পুলিশ সংস্কারের কাজ
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: পুলিশ সংস্কারের কাজ চলছে ঢিমেতালে। সংস্কার হলে বাহিনীটির উপর রাজনৈতিক প্রভাব কমবে অনেকটাই। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। ক্রমান্বয়ে পুলিশের আধুনিকায়নের কাজ এগিয়ে চলেছে।
দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অন্যতম প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী পুলিশ। ১৮৬১ সালের ‘পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল’- পিআরবিকে ভিত্তি করেই চলছে এই বাহিনী। যদিও পুলিশের সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বারবারই। সর্বশেষ ২০০৭ সালে সংস্কারের একটি উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি এখনো।
প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছিল- মহাপরিদর্শক থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার পর্যন্ত কাউকেই পদায়নের দুই বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক চাপে বদলি করা যাবে না। পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে মন্ত্রী, এমপি বা কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির টেলিফোন কিংবা লিখিত বা মৌখিক সুপারিশ ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। জাতীয় পুলিশ কমিশন গঠন করে তার মাধ্যমে পুলিশ প্রধান নিয়োগ দিতে হবে। পুলিশ প্রধানের সুপারিশে সরকার জেলা পুলিশ প্রধান নিয়োগ করবে।
একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সংস্কার প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে একদিকে পুলিশের জবাবদিহিতা বাড়বে অপরদিকে পুলিশের উপর রাজনৈতিক প্রভাব কমবে অনেকটাই। যারা রাষ্ট্রের নীতিগুলো নির্ধারণ করছেন তাদের বোঝা এবং বুঝে নতুন আইন করে পুলিশ সিস্টেম প্রবর্তন করা যাতে করে জনগণকে সেবা দেওয়া যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসপি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে পুলিশ বাহিনীর নিম্ন পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রভাব চলছেই। এই প্রভাব থেকে বের হতে পারলেই পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতো। থানার একজন এসআইকে কোনো নির্দেশ দেওয়া হলে তিনিও কোনো না কোনো মন্ত্রী-এমপির দোহাই দেন। আর বদলির বিষয়ে অনেক সময়ই ভাবতে হয় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।
সম্প্রতি ঢাকার এসবির এক এসআইকে বদলির আদেশ দেওয়া হলে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ঢাকায় থেকে যান। এছাড়া ওসিদের ম্যানেজ করে পছন্দের থানায় এসআই ও এএসআইরা থাকছেন দীর্ঘদিন। অপরাধকা-ে জড়িয়ে পড়াদের বিষয়ে অবশ্য বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সদর দফতরে প্রতি কার্যদিবসে কোনো না কোনো এসআই বা এএসআইর বদলির আদেশ ঠেকাতে তদবির চলছে। কখনো সাংবাদিক নেতা কখনো রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে করানো হচ্ছে এসব তদবিরের কাজ। পুলিশের সংস্কার প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে এসব তদবিরের দরকার হতো না বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারাই। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু