আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট থেকে: সিলেটের শারপিন টিলায় পাথর উত্তোলনের সময় নিহত ৬ শ্রমিকের মধ্যে দুই জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার মধ্যরাতে নেত্রকোনার পুর্বধলা এলাকায় থেকে ওই দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে- চারটি লাশের খোজে অনুসন্ধানে রয়েছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় পর্যন্ত লাশগুলো খুজে পাওয়া যায়নি। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা জানান- খবর পেয়ে তারা মধ্যরাতের দিকে নেত্রকোনার পূর্বধলা গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় তারা ওই এলাকা থেকে শারপিন টিলায় নিহত পাথর শ্রমিক আব্দুল কুদ্দুস ও খোকনের লাশ উদ্ধার করেন। তিনি বলেন- পুলিশ আব্দুল হাদি ও আব্দুল কাদিরের লাশের খোজ করছে। কারও লাশ এখন আর কোম্পানীগঞ্জে নেই। শ্রমিকদের বাড়ির ঠিকানা পেলে লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া স্থানীয় সূত্রে হাফিজ আলী নামে নিহত আরও শ্রমিকের নাম পাওয়া গেছে। ওদিকে, সোমবারের ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে গর্তের মালিক আনজু মিয়া। তার কোনো খোজ পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই উদ্ধারকৃত ৬টি লাশ আনজু মিয়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঘন্টাখানেকের মধ্যে লাশগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। আর এসব লাশ নদীপথেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে নেত্রকোনা এলাকায়। পাথর কোয়ারিতে নিহত শ্রমিক নিহত হওয়া এবং মারা যাওয়া শ্রমিকদের পরিচয় ও লাশ খুজে বের করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাতেই সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে এক সদস্যের এবং পুলিশ প্রশাসন থেকে তিন সদস্যের পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সিলেট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা জানিয়েছেন, পাথর কোয়ারিতে নিহতের ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসনাতকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সহকারী পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমান ও ওসি (এলআইবিজিবি) আব্দুল খালেক। সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন বলেছেন, কোম্পানীগঞ্জে নিহতের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনের গঠিত দুটি তদন্ত কমিটিই গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। সকালে কোম্পানীগঞ্জের শারপিন টিলায় যান। এ সময় তারা শাহ আরপিন টিলায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে মোবাইল কোর্ট। মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিচালিত অভিযানে একটি বোমা মেশিন এবং ১১টি শ্যালো মেশিন আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয়। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং তদন্ত কমিটির প্রধান আবু সাফায়াত মুহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাছুম বিল্লাহ, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি বায়েছ আলম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মাহবুব আহমদ, বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী এডভোকেট শাহ শাহেদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম