সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই ৩১৫টি উপজেলা সদরে এসব উপজেলায় হচ্ছে মডেল বিদ্যালয়
হাসান আরিফ: দেশের ৩১৫টি উপজেলা সদরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। আর ১৯৫টি উপজেলায় একটিও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। তাই এসব উপজেলাতে সরকার একটি করে বেসরকারি বিদ্যালয় নির্বাচন করে মডেল বিদ্যালয় করছে। ফলে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো মাল্টিমিডিয়া নির্ভর শ্রেণিকক্ষসহ আধুনিক বিদ্যালয়ে রুপান্তর হবে।
জানা গেছে, বেসরকারি বিদ্যালয় নির্বাচন করে মডেল বিদ্যালয়ে রুপান্তর করতে সরকার ২০১২ সালে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটি ২০১৩ সালে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করতে পারেনি সরকার। এরই মধ্যে দুই দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়নো হয়েছে। এজন্য প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৯২ কোটি টাকা। আবারো মেয়াদ বাড়ানোর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় তা বাড়িয়ে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। ওই সময়ে কাজ হয়েছিল মাত্র ৬৮ শতাংশ। এরপর আবারো মেয়াদ দেড় বছর বাড়িয়ে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু তাতেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাই আবারো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এবার কোনো প্রকার ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
জানা গেছে, আগের দুই দফায় মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ৪৬৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকার প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ৫৫৮ কোটি টাকা হয়েছে। নির্ধারিত সময় কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটির ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৯২ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
ব্যয় ও সময় বাড়ানোর কারণ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, অনুমোদিত প্রকল্পে ছয় উপজেলাকে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া একটি উপজেলাকে এই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, বেঞ্চের সংখ্যা ও ডিজাইন পরিবর্তন করায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ৯২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের কার্যক্রমগুলো হল: নির্বাচিত ৩১৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯টি বিদ্যালয়ের ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ অথবা নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ, ৩১৫ বিদ্যালয়ের বিদ্যমান ভবনের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, ২৮৬টি নতুন ভবন নির্মাণ, ৩১৫ বিদ্যালয়ে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, বইপত্র ও লার্নিং উপকরণ, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ, খেলার সামগ্রী সরবরাহ করা ইত্যাদি।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, প্রকল্পটি ২০১৩ সালে শুরু হলেও নানা কারণে মেয়াদ বাড়াতে হয়েছে। তবে এবার কোনো প্রকার ব্যয় না বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। নতুন করে আর মেয়াদ বাড়াতে হবে না। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি