জাল্লিকাট্টু বিতর্কে ইন্ধন জোগাচ্ছে আইএসআই!
নূসরাত জাহান: ষাঁড়ের লড়াই জাল্লিকাট্টু নিয়ে গোটা ভারত এখন উত্তাল। জাল্লিকাট্টুকে কেন্দ্র করে তামিল নাড়ুর লোকজন কেন এত উত্তেজিত সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজরও চেষ্টা করছে ভারত সরকার। জাল্লিকাট্টুকে নিয়ে তামিল নাড়ুতে চলা আন্দোলনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সুব্রামানিয়াম স্বামী। তার দাবি, পরিস্থিতি সামাল দিতে অশান্ত তামিল নাড়ুতে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে হবে। প্রয়োজনে আধা সামারিক বাহিনী নামাতে হবে।
টুইট বার্তায় সুব্রামানিয়াম বলেছেন, ‘চেন্নাইয়ে হঠাৎ করে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে ইন্ধন দিচ্ছে আইএসআই। এ কারণেই বিক্ষোভ এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। মেরিনা সৈকতে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে প্রভাকরণ ও হাফিজ সাইদের লোকজনকে দেখা গেছে। আইএসআই শুধু আন্দোলনে ইন্ধন জোগাচ্ছে না তারা অর্থ দিয়ে আন্দোলনকে জাগিয়ে রাখছে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘তাড়িল নাড়ুতে জরুরি ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা উচিত। এছাড়া এখানে সিআরপিএফ, বিএসএফ ও সেনাবাহিণী মোতায়েন করা দরকার। এটা না করলে নকশাল, জিহাদিদের হাত থেকে তামিল নাড়ুকে বাঁচানো যাবে না।’
সুব্রামানিয়ামের করা এমন টুইট নিয়ে খানিকটা অস্বস্তিতে পড়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। কারণ এডিএমকের শক্তিতেই বলিয়ান বিজেপি। তামিলনাড়ুর সমস্যা রাজ্যের মানুষই মেটাবে এটা সবার আশা। কেন্দ্রের বেশি উৎসাহের বার্তা গেলে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে। একথা বুঝতে বাকি নেই মোদি সরকারের। তাইতো সুব্রামানিয়ামকে টুইট থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছে দলের নেতারা। কারণ তারাও চাইছেন না সমস্যা রাজ্যের বাইরে ছড়িয়ে পড়ুক।
ষাঁড়ের লড়াই ঘিরে তামিলদের উত্তেজিত নিয়ে নানাজনে নানা কথা বলছেন। কারো মতে, কেন্দ্রের দীর্ঘ বঞ্চনা। কারো মতে, মানুষের চাকরি না থাকায় ষাঁড়ের লড়াইকে কেন্দ্র করে সহিংস হয়ে ওঠেছে রোকজন।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে তামিলদের আশা-আকাক্সক্ষা বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে। এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। তামিল নাড়ুতে যা হচ্ছে তা হলো সম্মিলিত ক্ষোভ। বছরের পর বছর ধরে এই রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার ফলাফল। তাইতো জাল্লিকাট্টুর ওপর নিষেধাজ্ঞা অনেকেই তামিল বিরোধিতা হিসেবে দেখছেন।
এক তামিল লেখকের মতে, এই রাজ্যে অনেক বড় বড় সমস্যা রয়েছে। সেসব ক্ষেত্রে তামিলরা প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেনি। কারণ সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। তাই জাল্লিকাট্টু ইস্যুতে মানুষের চেপে থাকা ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।
এ ঘটনার জন্য রাজনৈতিক মেরুকরণও দায়ী। এতোদিন হাল ধরে রেখেছিলেন আম্মা খ্যাত জয়ললিতা। অনেকে আস্থা রেখেছিল করুণানিধির প্রতি। এখন আম্মাও নেই, আর অবসর নিয়েছেন করুণানিধি। কাজেই রাজনৈতিক নেতৃত্বের শূন্যতা চরম মাত্রায় পৌছেছে। তারই বহিঃপ্রকাশ হলো মেরিনা সৈকতে। এ আন্দোলেনের ফায়দা নিতে চাইছে রাজেনৈতিক দলগুলো। সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড