মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে
আমাদের প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে জনবান্ধব হওয়ার নির্দেশ দেন। ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান ধারণার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে একাত্ম হতে বলেন। এমনকী রাষ্ট্রপতি জনগণের করের টাকায় পুলিশ সদস্যদের বেতন হওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। তাদের উদ্দেশে বলেন, জানমালের নিরাপত্তা পাওয়া জনগণের অধিকার, কোনো অনুকম্পার বিষয় নয়। এই কথাগুলো চলতি বার্ষিক পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বলা।
কিন্তু সেই একই সপ্তাহে গতকাল রাজধানীর শাহবাগে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতায় হরতাল সমর্থনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ দুজন সাংবাদিককে পিটিয়েছে। এটিএন নিউজের ক্যামেরাপার্সন আব্দুল আলিম ও রিপোর্টার ঈশান সেই দুর্ভাগ্যের শিকার! শাহবাগ থানায় নিয়ে গিয়ে তাদের ২০/৩০ জন পুলিশ বেধড়ক পিটিয়েছে। এর আগে সময় টেলিভিশনে সাঁওতাল পল্লীতে পুলিশের আগুন দেওয়ার ফুটেজ দেখানো হয়েছে। এ দুটোই ঘটনাই জলজ্যান্ত সাম্প্রতিক; তবে এমন আরো বহু ঘটনাই বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে কিংবা হারাচ্ছে।
অথচ আমাদের পুলিশের তিন মূলমন্ত্র হচ্ছেÑ শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও প্রগতি। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সেই ২৫ মার্চের কালো রাতে প্রথমেই রাজারবাগ পুলিশ হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এমনকী জনগণ ও দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দেয়।
কিন্তু সেই স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর যদি পুলিশকে জনশত্রু না বলে জনবান্ধব হতে বলা হয় কিংবা তাদের মূলমন্ত্র: শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও প্রগতি সুনিশ্চিত করতে জনগণের প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন নয়, বরং অধিকার সমুন্নত রাখতে বলা হয়, তবে নিশ্চয়ই সেখানে মস্ত ব্যত্যয় ঘটেছে বলতে হবে। এটি গভীর ভাবনার বিষয় বৈকি!
প্রবাস থেকে শুধু বলবো, নাঈম ভাই, আপনি ‘বিসিজেডিসি’ সংগঠন গড়ে ‘সমৃদ্ধ ও সাহসী’ সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করতে চান। অথচ শাহবাগের ঘটনায় অবলীলায় বেধড়ক পুলিশি পিটুনির শিকার ওই দুই সংবাদকর্মী তো রীতিমত লাঞ্ছিত ও অপমানিত হলেন, কে দেবে সেই কৈফিয়ত? কেউ কি আছে যার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া যায়, নাকি আজো বাংলাদেশে ন্যায়বিচার সুদূরপরাহত!
ই-মেইল : নঁশযধৎর.ঃড়ৎড়হঃড়@মসধরষ.পড়স