সার্চ কমিটির বিষয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করণীয় নির্ধারণে দল ও জোটের সভায় সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি
শাহানুজ্জামান টিটু: সার্চ কমিটির বিষয়ে আজ সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলের অবস্থান তুলে ধরবেন। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া দলীয়ভাবে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে। এদিকে গত বুধবার নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে সার্চ কমিটির নাম ঘোষণার পরপরই এর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি তার পক্ষে এক প্রতিক্রিয়ায় হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানান। সেখানে তিনি রাষ্ট্রপতির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুুদু বলেন, সার্চ কমিটি গঠনের পর সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা দেখে দলীয় ফোরাম ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে বিএনপি। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা একটা সিদ্ধান্তে যাব। তবে ভোরের সূর্য দেখে বোঝা যায় সারাদিন কেমন যাবে।
সার্চ কমিটি নিয়ে দলের মহাসচিবের এই বক্তব্যের সমর্থন জানিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তবে তিনি বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে থেকে যে সিদ্ধান্ত এসেছে আমরা মনে করি তা মহামান্য রাষ্ট্রপতির নয়, প্রধানমন্ত্রীর পরার্মশক্রমেই এই কমিটি করা হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর বাইরে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় নয়। এটা সাংবিধানিকভাবেই স্বীকৃত। তবে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে ব্যবহার করে এই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারতেন।
গত সার্চ কমিটির সঙ্গে এই সার্চ কমিটির কোনো নতুনত্ব নেই এমনটা দাবি করে শামসুজ্জামান বলেন, এটাকে সার্চ কমিটি না বলে ফাঁস কমিটি বলা যায়। বিএনপির যে প্রস্তাবনা ছিল সেটা হলো গণতন্ত্রের স্বার্থে গণতন্ত্রের স্বপক্ষে সবাই মিলে মিশে একটা আস্থাশীল নির্বাচন কমিশন গঠন করা। তিনি বলেন, যে কারণে আমরা প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। আমরা ব্যক্তিকে প্রধান করিনি। সেক্ষেত্রে সরকার যে বিবেচনা নিয়ে এটা করেছে, তা দলীয় বিবেচনায় করা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যাদেরকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই সরকারের লাভজনক পদে এখনো বিদ্যমান। গত কমিটিতে যারা ছিলেন তাদের পরামর্শে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে সেই কমিশন বাংলাদেশে একটা কালো অধ্যয়ের সূচনা করেছে। তাদের গঠিত নির্বাচন কমিশন ঘৃণ্য একটা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেছে। সেই সব ব্যক্তিদের সামনে এনে কমিটি করা হয় সেটা কি ফল দেবে তা তো এখনই বোঝা যায়।
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মনে করেন, সরকার মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ব্যবহার করে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা থেকে উত্তরণের একটা সুযোগ নিতে পারত। দেশে নির্বাচন নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে এই সংকট উত্তরণ ঘটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু তারা সেটা না করে বরং নির্বাচন প্রশ্নে যে সংকট চলছে তাকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সামনে সেটা কি ফল দেবে এখনই সেটা বলা যাবে না। দুদু বলেন, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে আবারো দেশে দলীয় প্রভাবযুক্ত একটা নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ৫ জানুয়ারির মত একটা দখলি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অর্থাৎ দেশকে একটা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হলো। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী