পুতিনকে বিশ্বাস করবেন না : থেরেসা মে
ইমরুল শাহেদ: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। এ সময় তিনি ফিলাডেলপিয়া ও ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করেন। শুক্রবার রাতে তার যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছ্।ে তাদের এই বৈঠক এক ঘন্টা স্থায়ী হবে। এ সময়ে তাদের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে। যার মধ্যে ব্যবসা, প্রতিরক্ষা, ন্যাটোসহ আরো কিছু বিষয়। আর রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। তবে উল্লেখ করার বিষয় হলো ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাগ্রহণের পর এটাই তার কোনো বিদেশী রাষ্ট্র নায়কের সঙ্গে প্রথম বৈঠক। কিন্তু বৈঠকের আগে থেরেসা মে ফিলাডেলপিয়ায় রিপাবলিকানদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য আর কখনো ব্যর্থ সামরিক হস্তক্ষেপে যাবে না। কারণ ‘আমরা কাউকে আমাদের ইমেইজে গড়ে তুলতে চাই না।’ যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে ব্যবসা, প্রতিরক্ষা এবং রাশিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ শনিবার প্রথমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন। থেরেসা মে ফিলাডেলপিয়ার বক্তৃতায় বলেন, ‘ইঙ্গ-মার্কিন সম্পর্ক কেমন তা বিশ্ববাসী জানে।’
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনটন চার্চিলের সময় থেকে এ সম্পর্ক পল্লবিত হয়ে আসছে। চার্চিল-রুজভেল্ট, রিগান-থেসার, বুশ-ব্লেয়ার, ওবামা-ক্যামেরন পর্যন্ত রয়েছে এর বিস্তার। আর এখন হতে যাচ্ছে ্ট্রাম্প-থেরেসা সম্পর্ক।
থেরেসা মে বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘শুধু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, আমি একজন রক্ষণশীল সদস্য। এটা রিপাবলিকান দলেরও মূল ভিত্তি – স্বাধীনতার মূল্য, কাজের মর্যাদা, জাতীয়তার মুল নীতি, পরিবার, অর্থনৈতিক দূরদর্শিতা, দেশপ্রেম – জনগণের হাতে ক্ষমতা ন্যাস্ত করা।’ তিনি বলেন, ‘আমি জানি সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে এর সব উপাদানই আপনারা ধারণ করেছেন।’
থেরেসা মেই প্রথম বিদেশী নেতা যিনি ফিলাডেলপিয়ায় রিপাবলিকানদের বার্ষিক বৈঠকে বক্তৃতা করেছেন এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বলেন তিনি যেন রাশিয়ান নেতা ভøাদিমির পুতিনকে বিশ্বাস না করেন। তিনি রোনাল্ড রিগ্যানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, রাশিয়ার কথা এলে রিগ্যানের উদাহরণটি এসে যায়। রোনাল্ড রিগ্যান যখনই রাশিয়ান নেতা মিখাইল গরভাচবের সঙ্গে আলোচনা করতেন তখন তিনি রাশিয়াকে বিশ্বাস করতেন, কিন্তু যাচাই-বাছাই করার পর।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন সম্পর্কেও আমি বলতে চাই যে, তার সঙ্গে কাজ করুন কিন্তু খুব সাবধানে।’
থেরেসা মে বলেন, ‘পুতিন এক সময় বলেছিলেন পূর্ব ইউরোপ তার প্রভাবাধীন। তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট রিগ্যান ও প্রধানমন্ত্রী থেচার পূর্ব ইউরোপে যে ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন তাকে বিঘিœত করা আমাদের কোনো ক্রমেই উচিত হবে না।’
থেরেসা মে ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার রাতে রিপাবলিকানদের উদ্দেশ্যে যে বক্তৃতা করেন তাতে তিনি ইরাক ও আফগানিস্তানে ব্রিটেনের ব্যর্থ যুদ্ধের যে পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করেছেন তা তিনি বাতিল করে দেন। তার এই বক্তব্য টনি ব্লেয়ারের ‘উদানৈতিক হস্তক্ষেপ’-এর ডকট্রিনকে বাতিল করে দেয়। টনি ব্লেয়ার ১৯৯৯ সালে শিকাগো বক্তৃতায বলেছিলেন, ‘কোনো নির্দয় স্বৈরাচারকেই চ্যালেঞ্জ ছাড়া যেতে দেওয়া হবে না।’ সূত্র : ইন্ডিপেন্ডেন্ট, স্কাই নিউজ, সিএনএন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম