মুক্তিযুদ্ধে কার কী ভূমিকা ছিল তা দেখা হচ্ছে : মোজাম্মেল হক
গাজী মিরান : বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে নতুন তালিকা করা হচ্ছে। কিন্তু নতুন এই তালিকায় রাজনৈতিক প্রভাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না, জানিয়েছেন সরকারের একজন মন্ত্রী। তাই স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার মুক্তিযোদ্ধাদের নির্ভুল একটি তালিকা তৈরির উদ্যোগ হিসেবে চলছে উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাই।
এ বিষয়ে বিবিসি বাংলার টেলিভিশন অনুষ্ঠান বিবিসি প্রবাহতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, এই বিষয়ে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা নেওয়ার জন্য কেউ যদি দুর্নীতির আশ্রয় নেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে যখন তালিকা হয় তখন মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো সংজ্ঞাই নির্ধারিত হয়নি। তবে এখন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার কী ভূমিকা ছিল সেটাই দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন যে তালিকা তৈরির কাজ চলছে তাতে আনুষ্ঠানিক সনদ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনলাইন এবং হাতে লেখা অন্তত ১ লাখ দরখাস্ত জমা পড়েছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে যেসব তালিকা করা হয়েছিল সেখানে পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যাও বাড়তে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে দুর্নীতির যে অভিযোগ রয়েছে সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এই সকল কারণেই মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভুল তালিকা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, যারা বর্তমান তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাবে তারা আবারও আবেদন করতে পারবেন বলে তিনি বলেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের পরবর্তী বংশধররা এই সনদের মাধ্যমে যেহেতু বেশকিছু সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন, সেকারণেই কেউ কেউ দুর্নীতির মাধ্যমে তালিকায় নাম নিবন্ধ করার চেষ্টা করেন এমন অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে সরকার এবার কতটা সতর্ক ? বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা একজন সাধারণ মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর জন্য যদি সাক্ষী দেয় আর তার যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তবে ওই সনদধারী মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
৮০ দশকে সর্বপ্রথম মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় তালিকা প্রণয়ন হয়। সে সময়ের ঐ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় ১ লাখেরও কিছু বেশি মুক্তিযোদ্ধা। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফা যাচাই-বাছাই শেষে বিএনপি সরকারের আমলে প্রায় ২ লাখ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে গেজেট প্রণয়ন করা হয়। বর্তমানে গেজেট ভুক্ত রয়েছে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা। সম্পাদনা: এনামুল হক