সাতক্ষীরার এমপি পুত্রসহ চারজনের বিরুদ্ধে আবারও চাঁদাবাজির মামলা
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩১২-এর সংসদ সদস্য বেগম রিফাত আমিনের ছেলে আলোচিত রাশেদ সারোয়ার রুমনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আবারও একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এরপর রাত ১০টার দিকে পুলিশ এ মামলার এজাহার নামীয় আসামি ইমরান হোসেন টনি ও তুহিনকে সদর উপজেলার ভোমরা বন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
সদর থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্যা জানান, গত বৃহস্পতিবার সাংসদপুত্র রুমনসহ তার চার সহযোগী ভোমরা স্থলবন্দরের জনৈক মাকছুদুর রহমানের অফিসের মধ্যে আটকে রেখে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের চাচাতো ভাই ফিরোজকে ব্যাপক মারপিট করে। এ সময় তার কাছে থাকা ২৫ হাজার টাকা আসামিরা ছিনিয়ে নেয় এবং পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ব্যবসায়ী সিরাজুল ও তার ভাই ফিরোজকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। ওসি আরও জানান, এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন ভোমরা ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়ার ইসহাক গাজীর ছেলে ইমরান হোসেন টনি, একই গ্রামের অহিদুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ হোসেন ও লক্ষীদাড়ী গ্রামের আনারুল মোল্লার ছেলে তুহিন হোসেন। এদের মধ্যে ইমরান হোসেন টনি ও তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা শহরের মাগুরা এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মিলনের নিকট চাঁদা দাবি, বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও প্রায় ২০ লাখ টাকার গরু লুটের ঘটনায় দায়ের কারা মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন এমপিপুত্র রুমন। তিন মাস কারাভোগের পর ডিসেম্বর মাসে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এছাড়া গত বছর শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের একটি রিসোর্ট থেকে রাতের বেলায় তিন রমনীকে নিয়ে মদ্যপান অবস্থায় ফূর্তি করার সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন রাশেদ সারোয়ার রুমন। এ সময় তার নিকট থেকে তার মায়ের ব্যবহারিত লাইসেন্সকৃত পিস্তল ও ২৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই রিসোর্টের পার্কিং থেকে তার মায়ের জাতীয় সংসদের স্টিকার লাগানো বিলাস বহুল পাজোরো গাড়িটিও জব্দ করেন পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বেআইনিভাবে অস্ত্র রাখার দায়ে মামলা নিতে গেলে বাঁধ সাধেন তার মা এমপি মিসেস রিফাত আমিন। তিনি সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগর থানায় ছুটে গিয়ে ওসিকে ব্যাপক শাসান এবং কিভাবে ওসিগিরি করেন তাও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে ওসি চাপের মুখে রুমনকে রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগে একটি মামলা দিয়ে সে যাত্রায় রেহাই পান।
এছাড়াও এই রুমনের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অস্ত্রসহ একাধিক অভিযোগে থানায় মামলা রয়েছে। এ সব ঘটনায় রুমন দীর্ঘদিন আলোচিত ছিল সাতক্ষীরা শহরে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম