৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম সপ্তাহে কাজ করেন ৪৫টি
ইমরুল শাহেদ: ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ সেøাগান নিয়ে নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ২০ জানুয়ারি। এরপরই নিউইয়র্কের ধনাঢ্য এই ব্যবসায়ী হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রবেশ করেই আর এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করেননি। তিনি নানা বিষয়ে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন। ৪৫তম এই প্রেসিডেন্ট এক সপ্তাহে অর্থাৎ ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৫টি কাজ করেন।
২০ জানুয়ারি তিনি প্রথমে অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভুলে যাওয়া নামগুলোকে আবার ফিরিয়ে আনবেন তিনি। তিনি বলেন ব্যবসা, কর, ইমিগ্রেশন এবং পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক- সব কিছুই মার্কিন স্বার্থকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে। তার দুটি অনুষ্ঠানে জনউপস্থিতি ও আবহাওয়া নিয়ে দুটি অশুদ্ধ বিবৃতির কথা উল্লেখ করেন। ফ্রাংক সিনাত্রার মাই ওয়ে-এর সঙ্গে ফার্স্ট লেডিকে নিয়ে নাচেন। তার সমালোচকদের শত্রু বলে উল্লেখ করেন। ওবামাকেয়ার বিলুপ্তির প্রথম নির্বাহী আদেশ দেন। হোয়াইট হাউসের ওযেব পেজগুলো ডিলিট করেন।
২১ জানুয়ারি তিনি সাবেক সিআইএ পরিচালক জন ব্রেনানের ওপর ক্রোধ প্রকাশ করেন। ইরাকি তেলের ব্যাপারে সিআইএর সঙ্গে কথা বলেন। সন স্পেন্সারের সঙ্গে সংবাদ নিয়ে কথা বলেন। হাজার হাজার নারীর প্রতিবাদের ঝড় দেখেন। টুইটে ইংরেজি ‘অনার’ শব্দটির ভুল বানান লেখেন। অভিষেকের ছবি দেখার জন্য ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের পরিচালকের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন।
২২ জানুয়ারি তিনি চারটি কাজ করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, তিনি বলেছেন যেসব নারীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে তারা নির্বাচনে ভোট দেয়নি। ৩০ জন সিনিয়র স্টাফকে বহাল করেন। নিজের কর উপাত্ত প্রদানে অপারগতা জানান।
২৩ জানুয়ারি তিনি ১১টি কাজ করেন। তার মধ্যে রয়েছে, মেক্সিকো সিটি পলিসি পুনর্বহাল করেন। তার অভিষেকের দিনটিকে ন্যাশনাল ডে অব পেট্রিওটিক ডেভোশন দিবস ঘোষণা করেন। তিনি সীমান্ত কর আরোপের কথা বলেন। ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ট্রেড ডিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন।
২৪ জানুয়ারি তিনি পাঁচটি কাজ করেন। ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকারচারের এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন এজেন্সিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। বিতর্কিত ডেকোটা এ্যাকসেস এ্যান্ড কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইন্সকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নির্বাহী আদেশ প্রদান করেন। ট্রাম্পের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন। শিকাগোতে গুলির সহিসংতা বন্ধ না হলে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করবে বলে বলা হয়।
২৫ জানুয়ারি তিনি সাতটি কাজ করেন। তিনি সিএনএন-এর কাছে জানতে চান তার অভিষেক অনুষ্ঠান কত জন দেখেছেন। নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক শিরোনামের একটি দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করেন। মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমান্ত বেড়া নির্মাণ নিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। তার অভিষেকের ছবি দিয়ে হোয়াইট হাউসে একটা প্যানোরমা চালু করেন। তার দরজার পেছনের চরিত্রের ছিঁটেফোটাও প্রকাশের জন্য কর্মচারীদের অনুপ্রাণিত করেন তিনি। ক্ষমতার শেষ মুহূর্তে বারাক ওবামা ও জন কেরির প্যালেস্টাইনকে মানবিক সহায়তা হিসেবে দেওয়া ২২১ মিলিয়নের অনুমোদন তিনি খতিয়ে দেখছেন। তিনি তার প্রশাসনকে ইমিগ্রান্টদের করা অপরাধের সাপ্তাহিক বিবরণ তালিকাভুক্ত করতে নির্দেশ দেন।
২৬ জানুয়ারি তিনি ছয়টি কাজ করেন। অভিষেকের দিন তিনি যে পরমাণু কোড পেয়েছেন সেটাকে ‘সোবারিং মোমেন্ট’ বলে উল্লেখ করেন। প্রথমবারের মতো তিনি প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ বিমানে আরোহণ করেন। সীমান্ত বেড়া তৈরির জন্য মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্য থেকে ২০ শতাংশ কর আদায়ের আহ্বান জানান। তিনি এবিসি নিউজকে বলেন, নির্যাতন কাজ করে। তিনি দেখেছেন তার কর্মীরা কিভাবে থেরেসা মের নাম তিন বার ভুল করেছেন।
২৭ জানুয়ারি তিনি চারটি কাজ করেছেন। তিনি অবৈধ ব্যালট নিয়ে কথা বলেন। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার থেরেসা মের রিপাবলিকানদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করার পর ট্রাম্প তার সঙ্গে কথা বলার প্রস্তুতি নেন। সূত্র : ইন্ডিপেন্ডেন্ট। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম