বিএনপিকে কমিশন মেনে নিয়েই নির্বাচনে যেতে হবে, নইলে নিবন্ধন বাতিল
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: সার্চ কমিটির পাঁচ সদস্যের ব্যাপারে আপত্তি করলেও এখনো পর্যন্ত তা প্রত্যাখ্যান করেনি বিএনপি। আর প্রত্যাখ্যান না করায় রাষ্ট্রপতি, সরকার ও আওয়ামী লীগ এটাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছে। কারণ তারা মনে করছে, বিএনপিকে সার্চ কমিটি মেনে নিতে হবে। উপরে তারা যত বিতর্কই তুলক না কেন? তাদের সামনে কোনো উপায় নেই।
এই কমিটি কমিশনের সদস্য হিসাবে যে দশজনের নাম প্রস্তাব করবে রাষ্ট্রপতি তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে নিয়োগ করবেন। আর ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিএনপি নানা সমালোচনা করতে পারে কিন্তু এটা না মেনে উপায় থাকবে না। কারণ আরপিওতে বলা আছে, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের মধ্যে যেসব দল পর পর দুইবার নির্বাচনে অংশ নিবে না, সেই সব দলের নিবন্ধন বাতিল করবে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন কমিশন বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করতে পারে, এমন সুযোগ থাকায় সরকার বিএনপির সার্চ কমিটির মানা না মানা এবং নির্বাচন কমিশনারদের মানা না মানা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। বরং তারা বিষয়টি এখন যেভাবে চলছে সেই ভাবেই এগুতে দিতে চাইছে। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা বলেন, সরকার আবার রকিব মার্কা কমিশন করতে চাইছে। তা করে ৫ জানুয়ারির মতো একটি নির্বাচন করবে। এই অবস্থায় তারা সবকিছুই তাদের মনের মতো করছে। সার্চ কমিটি করেছে নিজেদের দলীয় লোক দিয়ে। এই অবস্থায় সার্চ কমিটি দলীয় হওয়ায় তারা নির্বাচন কমিশনও করবে দলীয় লোক দিয়ে। দলীয় লোক দিয়ে করার কারণে নির্বাচনও হবে সরকার ও আওয়ামী লীগের মতোই। আমরা এখন কেবল চেষ্টা করছি সব কথা জনগণকে জানিয়ে রাখতে। জনগণ যেমন দেখছে বিশ্ববাসীও দেখছে। সরকার কত অগণতান্ত্রিক কাজ করছে। জাতিসংঘও দেখছে। এই অবস্থায় সরকার শেষ পর্যন্ত তাদের পরিকল্পনার পুরো বাস্তবায়ন করতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেন, সার্চ কমিটির পাঁচজনই সরকার দলীয়। তাদের দিয়ে নিরপেক্ষ কমিশন হবে না। তারা দলীয় কমিশন গঠন করবেন। আর রাষ্ট্রপতিও নিরপেক্ষতার পরিচয় দেননি। আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছি সেই প্রস্তাবের কোনো কিছুই তিনি নেননি। একজন নারী সদস্য দিয়ে তিনি যদি মনে করেন বিএনপির প্রস্তাব বাস্তবায়ন করেছেন তাহলে তা ভুল কারণ ওই কমিটি দিয়ে নিরপেক্ষ কমিশন হবে না। আর যে নারী সদস্যকে কমিটিতে রাখা হয়েছে, তিনি দলীয়। এটা তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রমাণও দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার, আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্রপতি সবাই দলীয় স্বার্থ বিবেচনা করেই কাজ করছেন। কেউ দেশের স্বার্থে কাজ করছেন না। এটা না করাটাই দেশ ও জাতির জন্য দুঃখজনক। আমরা আবার যাতে নির্বাচনে না যাই। এটা চেষ্টা তাদের থাকতেই পারে। তবে আমরা পরিবেশ ও পরিস্থিতি দেখে ও নিজেদের করণীয় ঠিক করেই সিদ্ধান্ত নেব। এই জন্য ম্যাডাম দলীয় ফোরামে দলের সিনয়ির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং সিদ্ধান্ত নিবেন।
নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসলে এটা তাদের দোষ। আমরা তফসিল ঘোষণা করলে যারা যারা অংশ নিবে তারা আসবে। আমরাতো আর কারো বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেকে আনবো না। আগামী কমিশনও সেটাও করবে না। কারণ এটা কমিশনের দায়িত্ব না। বিএনপি নির্বাচনে আসবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত তাদেরকে নিতে হবে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম