হাসিবুল ফারুক চৌধুরী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গীপাড়ায় গিয়ে যার ভ্যানে চড়েছিলেন, সেই ইমাম শেখকে বিমান বাহিনীতে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। ভ্যানটিও উপযুক্ত দাম দিয়ে কিনে নিয়েছে বিমানবাহিনী। সেটি জাদুঘরে রাখা হবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা একথা জানিয়েছেন।
যশোরে বিমানবাহিনীর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটির স্কোয়াড্রন লিডার হারুন-উর-রশিদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গতকাল রোববার টুঙ্গীপাড়ায় সরদারপাড়া গ্রামে ইমাম শেখের বাড়িতে যান এবং চাকরির বিষয়টি জানান। ইমাম শেখের অসুস্থ বাবার চিকিৎসা ও ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে ৪০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় ইমামের মা শাহানূর বেগমের হাতে।
টুঙ্গীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, টুঙ্গীপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি বিএম গোলাম কাদের সাক্ষী হিসেবে ইমাম শেখের নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন। এ সব প্রক্রিয়া শেষে দুপুর ১২টার দিকে ইমাম শেখ ব্যাগ গুছিয়ে ও ভ্যান নিয়ে বিমানবাহিনীর গাড়িতে করে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানে তাকে নেওয়ার কথা রয়েছে।
গোলাম কাদের বলেন, বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ইমাম শেখকে নিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তাকে কোন পদে নিয়োগ দেওয়া যায় এ সিদ্ধান্ত পরে হবে। ইমাম শেখের ভ্যানটি জাদুঘরে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা তাদের জানিয়েছেন। আর ইমাম শেখ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, নিজেকে তার ‘সুখী ও ভাগ্যবান’ মানুষ মনে হচ্ছে।
ইমামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইউনুস আলী মোল্লা বলেন, ইমামের বাবা মানসিক রোগী। সংসারের অভাব অনটনের কারণেই ইমাম পড়াশোনা ছেড়ে ভ্যান চালাত। প্রধানমন্ত্রী তার ভ্যানে চড়ার পর তার ‘ভাগ্য বদলে গেছে’।
ইমামের মা শাহানূর বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য যা করেছেন, তার জন্য আমরা সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমামের মনের ইচ্ছা জানতে পেরে তা পূরণ করেছেন। দরিদ্র এ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় রোভারমুট উদ্বোধনের জন্য গোপালগঞ্জে গিয়ে শুক্রবার সকালে টুঙ্গীপাড়ায় ইমাম শেখের (১৭) ব্যাটারিচালিত ভ্যানে চড়ে নিজের শৈশব স্মৃতির স্থানগুলো ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভ্যানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, তার স্ত্রী পেপপি সিদ্দিক, তাদের মেয়ে লিলা তুলি সিদ্দিক ও ছেলে কায়াস মুজিব সিদ্দিক। কায়াস মুজিবকে কোলে নিয়ে শেখ হাসিনা গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান থামিয়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন। সূত্র : বিডিনিউজ, এনটিভি