জাফর আহমদ: যে সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালক নিজেদের ব্যাংক ও অন্য ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে ঋণ নিয়েছিল তাদের কাছ টাকা ফেরত আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজেদের অনুসন্ধান বা অন্য সূত্র থেকে তথ্য পাওয়ার পর তদন্ত করে যে সব ব্যাংক ও ব্যাংকের পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি পেয়েছে সে সব ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসিয়েছে। গতকাল ২০১৬-১৭ অর্থবছরের দ্বিতীয়াংর্ধের মুদ্রানীতি প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্য্ংাকের গভর্নর ফজলে কবির, ডেপুটি গভর্নর মনিরুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালকদ্বয় ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
হলমার্ক কর্তৃক আত্মসাৎ করা টাকা সম্পর্কে ডেপুটি গভর্নর মনিরুজ্জামান বলেন, টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করছে। টাকা কোথায় গেল-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোথায় কত টাকা আছে আমরা যখন তথ্য পেয়েছিলাম সে তথ্য মানি লন্ডারিং ইউনিটকে দিয়েছিলাম। আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, কোনো টাকা যদি সিস্টেম থেকে উইড্রো হয়ে যায় এবং সেই টাকা যদি চেইন ও সিস্টেমে না থাকে তাহলে সে টাকা আর উদ্ধার করা যায় না। সে ক্ষেত্রে আমরা যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার তা নিয়েছি। পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকেও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোলেটারেল হিসাবে যে সব সম্পদ আছে সেগুলো সংযোজন করার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কিছু কিছু টাকা নেওয়ার ব্যাপারে আছে-সেগুলো ঋণই না। সেগুলোও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের আইনি সিস্টেম অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মোবাইল ব্যাংকিংকে পর্যবেক্ষণে আনার ব্যাপারে এসকে সুর বলেন, ভয়-ভীতি ও জিম্মি আদায় হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে-আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এ ধরনের সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে টাকা তোলার ক্ষেত্রে সীমা বেধে দেওয়া হয়েছে। তবে শ্রমজীবী মানুষ বিশেষ করে গার্মেন্ট শ্রমিক ও শহরে রিকশাওয়াসহ শ্রমজীবী মানুষের টাকা পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা দেনেদেন হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বিদেশি বিক্যাশ বন্ধ করা হয়েছে বলে জানান গভর্নর ফজলে কবির। তিনি বলেন, হুন্ডি বা অন্যকোনো কারণে রেমিটেন্স কমছে কি না-সে ব্যাপারেও স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
সাম্প্রদিককালে সরকারের ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ কমায় ব্যক্তিখাতে ঋণ যোগানোর পথ সুগম করেছে বলেও জানান গভর্নর। তবে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ বাড়ায় দেশে বন্ড বাজারের বিকাশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এতে সামাজিক উপকারিতার দিকও আছে। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী