আবদুর রহিম সেলিম, উখিয়া : মিয়ানমার সেনা, স্থানীয় অধিবাসী ও পুলিশের দমন নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন রাখাইন কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তি ঘুরে দেখেন। এসময় প্রতিনিধিদল বালুখালী বস্তির একটি ঝুঁপড়িতে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী রোহিঙ্গার নারী-পুরুষ নিয়ে বৈঠক করেন।
কমিশনের প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের শিলখালী গ্রামের নুর বেগম (২৮), মরিচ্যা বিলের গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন (২৫), নাইছা প্রু গ্রামের নুর জাহান (৫৫), নুর কায়েসা (২২), শিলখালী গ্রামের ফারেজা বেগম (২০), নাইছংয়ের ইয়াসমিন (২২), বুচিদংয়ের রশিদ আহমদ (৩০), খেয়ারিপাড়া গ্রামের আবুল কালাম (২৮), আনোয়ারা বেগম (২৫), লায়লা বেগম (৩২), সাইফুল ইসলাম (২৭), আনোয়ার কামাল (২৪), মোহাম্মদ হারুন (২৯), সাবের (৩০), আলী হোছন (২৭), আমির হোছন (৩১), খলিল (২৩) ও কুমিরখালী গ্রামের নুর বেগম ও সেতারা বানুসহ ১৯ জন নির্যাতিত রোহিঙ্গার সাথে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্ধার কক্ষে কথা বলেন।
পরে ওইসব রোহিঙ্গার কাছে জানতে চাওয়া হলে রাখাইন কমিশনের প্রতিনিধিদল তাদের কাছে কী জানতে চেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা জানান, মিয়ানমারে তাদের উপর কি ধরনের অত্যাচার, উৎপীড়ন করা এ হয়েছে তারা তা জানতে চাইলে রোহিঙ্গারা তাদের উপর বর্বরোচিত হামলা, ধর্ষণ, নির্যাতন, আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, হত্যা প্রভৃতি নির্যাতনের তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন।
রাখাইন রাজ্য বিষয়ক পরামর্শক কমিশন যা রাখাইন কমিশন নামে ব্যাপক পরিচিত প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন, উইন ম্রা, আই লুইন ও ঘাশান সালামে। প্রতিনিধিদল বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তির সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলেও তারা কোনো কথা বলেনি। গত অক্টোবরে রাখাইন রাজ্যে সীমান্ত চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার জের ধরে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন শুরু করলে ডিসেম্বরে কফি আনান মিয়ানমার সফর করেন।
তিনি রাখাইন রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিউ সশস্ত্র বাহিনী প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অন লায়েং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংসানসুচির সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সফর নিয়ে রাখাইন কমিশনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু