ইসমাঈল হুসাইন ইমু: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা বলেছেন, ঢাকার নিম্ন আদালতের ফটকের সামনে থেকে প্রায় সময়ই আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আর পুরান ঢাকার যে অবস্থা সেখান থেকে আসামি স্থানান্তর করা অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। সে কারণে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশে যদি নিম্ন আদালত স্থানান্তর করা যায় তবে তা আদালত ও কারা উভয় কর্তৃপক্ষের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
গতকাল সোমবার সকালে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ঢাকার নিম্ন আদালত স্থানান্তরের বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এতে সম্মত হয়েছেন। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না এরপরও নিম্ন আদালতে একটি নতুন ভবন নির্মিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সবচেয়ে অবহেলিত খাত উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগে হাজার হাজার মামলা। মাসের পর মাস অনেক আসামি হাজিরার সুযোগই পান না। বিচার বিভাগে সঙ্গতকারণে একটু সমস্যা আছে। এই খাত সবচেয়ে অবহেলিত।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের রেজিস্ট্রি ম্যানুয়ালি করা হয়। ডিজিলাইজেশন পদ্ধতি এখনো চালু করা যায়নি। কয়েদির হাজিরার তথ্য রেজিস্ট্রি হাতে করা হয়। মাসের পর মাস অনেকে কয়েদি হাজিরার সুযোগ পান না। তা ট্রেস করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, আমার জন্য বিচারপতি হিসেবে সবচেয়ে মর্মান্তিক হবে যদি বিনা বিচারে কেউ কারাগারে থাকেন। একটা প্রবাদ আছে আমরা বিনা বিচারে ১০০ জন অপরাধীকে ছাড়তে পারি কিন্তু নির্দোষ একজনকেও আটকে রাখতে পারি না। তা মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হবে।
এসকে সিন্হা বলেন, ঢাকা জজকোর্ট এতো কনজাসটেড যে ফাইল রাখা যায় না। যাতায়াত ব্যবস্থাও খারাপ। আমি নিজে বার অ্যাসোসিয়েশনে গিয়েছি সাহস করে। তাদের বলেছি ম্যাজিস্ট্রেসি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করার জন্য। কেরানীগঞ্জে জায়গাও আছে। প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি জানেন। আইনজীবীরাও প্রথমে রাজি হয়নি। পরে বোঝাতে সক্ষম হওয়ায় তারাও রাজি হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে নিম্ন আদালতে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কেন তা আমি জানি না। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে আবারও বলবো, ক্লাউডি জায়গা। আসামি ও কয়েদিদের যাতায়াত করতে ১২টা বাজে। ফিরতে সন্ধ্যা হয়। যদি ম্যাজিস্ট্রেসি কোর্ট স্থানান্তর করা যায়, তবে অর্থ বাঁচবে এবং যাতায়াতের সুবিধাও হবে।
তিনি আরও বলেন, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। কেরানীগঞ্জে আটক বন্দীদের মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার আসামিই বেশি। বিষয়টি আমি আমলে নিয়েছি। খুব দ্রুতই এই মামলার আপিলের শুনানি ও নিষ্পত্তি হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারও পরিদর্শন করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলার কারাগার পরিদর্শন করেন তিনি। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি