বাংলাদেশ থেকে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায় আনান কমিশন
আবদুর রহিম সেলিম, উখিয়া: সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে আসা কুতুপালং বস্তিতে আশ্রিত নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসার দুঃসহ বর্ণনা শুনলেন জাতিসংঘের আনান কমিশনের ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল ও আইওএম’র কান্ট্রি ডিরেক্টর। নির্যাতিত ও গৃহহারা এসব রোহিঙ্গার মুখ থেকে শুনে আনান কমিশনের সদস্যরা তাদেরকে মিয়ানমারে জাতি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কফি আনান কমিশনের প্রতিনিধি দলের ৩ সদস্য যথাক্রমে, উইন ম্রা, আই লুইন, ঘাশান সালামে ও আইওএম’র কান্ট্রি ডিরেক্টর পেপি সিদ্দিকা কুতুপালং বস্তি এলাকা পরিদর্শন শেষে বস্তির ডি ফাইভ-ব্লকের ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় নির্যাতিত ৩ রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেন। এসময় মিয়ানমারের গৌজবিলের রফিক (৪০), কমিশনের সদস্যদের বলেন, মিয়ানমার সেনারা তাদের বাড়িঘরে লুটপাট চালিয়ে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। মিয়ানমারের হাতিয়ারপাড়া গ্রামের নুরুল আলম (৩৫) জানায়, মিয়ানমারের সেনারা তার দুই ভাইকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলেছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। তারা কোনোরকমে প্রাণ বাঁচাতে এখানে চলে এসেছে।
সর্বশেষ সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারের নাইছাপ্রু নাইয়ারবিল গ্রামের নুরা বেগম (৩৫) জানান, মিয়ানমারের সেনারা তার হাত পা বেঁধে পুকুর পাড়ের ঢালুতে ফেলে ৩ জন সেনা সদস্য উপর্যপুরি ধর্ষণ করলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার শেষে তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বণিক ম্যানেজম্যান্ট কমিটির একাধিক সদস্য। রোহিঙ্গাদের উপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতন, হত্যা, জুলুম অত্যাচারের কথা শোনার পর কফি আনান কমিশন নিবন্ধিত কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে দ্রুত সময়ে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনপূর্বক মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু