উখিয়া ও টেকনাফের দুটি শিবিরে আনান কমিশনের প্রতিনিধিদল নির্যাতনের বর্ণনা শোনাল রোহিঙ্গারা
গাজী মিরান: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশের দমন-পীড়নের মুখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুটি শিবির পরিদর্শন করেছে কফি আনান কমিশনের প্রতিনিধিদল। তিন সদস্যের এই দলটি গতকাল রোববার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের দুটি রোহিঙ্গা শিবিরে যায়। সেখানে রোহিঙ্গাদের মুখ থেকে নির্যাতনের বর্ণনা শোনে তারা। সূত্র : প্রথম আলো
কফি আনান কমিশনের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন মিয়ানমারের নাগরিক উইন ম্রা ও আই লুইন, লেবানিজ নাগরিক ঘাশান সালামে। ঢাকা থেকে গতকাল সকালে কক্সবাজারে এসে প্রতিনিধি দলটি বেলা ১১টায় প্রথমে উখিয়া উপজেলার বালুখালীর জঙ্গলে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা শিবিরে যায়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান করে তারা। শিবিরের ১৯ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে তারা।
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন ইউএনএইচসিআর (জাতিসংঘ শরণার্থী-বিষয়ক সংস্থা), আইওএম (আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মুখ থেকে আনান কমিশনের সদস্যরা রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি শুনেছেন। আজ সোমবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তারা ঢাকায় ফিরে যাবেন।
আইওএম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উখিয়ার শিবিরের রোহিঙ্গা গৃহবধূ নুর বেগম আনান কমিশনের সদস্যদের বলেছেন, গত ডিসেম্বরে রাখাইন রাজ্যের শিলখালী গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
এতে তার বাড়িসহ ২০-২৫টি বাড়ি পুড়ে যায়। সেনাদের গুলিতে নিহত হন অনেকে। তার আত্মীয়দের অনেকে এখনো নিখোঁজ। প্রাণ বাঁচাতে তিনি অন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সীমান্ত অতিক্রম করে এই শিবিরে আশ্রয় নেন।
রাখাইন রাজ্যের মরিচ্যা বিল এলাকার বাসিন্দা গুলিবিদ্ধ মোসলেহ উদ্দিন আনান কমিশনের প্রতিনিধি দলকে বলেন, ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে সেনা ও পুলিশ তাদের গ্রামটিও ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ঘরের জিনিসপত্র লুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। মেয়েদের ধর্ষণ করে। গুলিতে আহত হন তিনি। পরে প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়েন।
রাখাইন রাজ্যের অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরেন নাইছাপুর গ্রামের নুর জাহান, নুর আয়েসা, শিলখালী গ্রামের ফারেজা বেগম, ইয়াসমিন, বুচিডং গ্রামের রশিদ আহমদ, খেয়ারিপাড়ার আবুল কালামসহ আরও কয়েকজন। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু