এস এম নূর মোহাম্মদ : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য সরাসরি জড়িত মর্মে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। গতকাল সোমবার এফিডেভিট আকারে ৬৫ পৃষ্টার এই প্রতিবেদন দাখিল করেন গাইবান্ধার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল্লাহ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রদর্শিত ভিডিও ক্লিপ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, কিছু পুলিশ সদস্য এবং দুজন সিভিল পোষাকধারী ব্যক্তি সাঁওতালদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগানোর ঘটনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। আরো কিছু পুলিশ সদস্য কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, যারা আগুন লাগানোয় অংশগ্রহণ করেননি। তবে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টাও করেননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে এবং হাজার হাজার জনতার উপস্থিতি দেখে বসতি স্থাপনকারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে আগুন লাগার পূর্বেই মাদরপুর ও জয়পুর গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল। বিষয়টি সাক্ষীদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে। ফলে এরূপ প্রেক্ষাপটে সাক্ষীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ আগুন লাগানোর ঘটনায় জড়িত স্থানীয় অপরাধীদের সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করতে পারেননি। তাছাড়া কোনো কোনো সাক্ষী তাদের জবানবন্দিতে আগুন লাগানোর ঘটনায় বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করলেও তাদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পুলিশের গুলির আওয়াজে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সাঁওতালরা তাদের স্থাপনা ছেড়ে চলে যায়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে গ্রুপটি খামারের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করেছিল, তারাই চামগাড়ী বিল নামক স্থানে সাঁওতালদের নির্মিত স্থাপনার কাছে যান। আর চামগাড়ী বিল নামক স্থানে নির্মিত স্থাপনা থেকে সাঁওতালরা চলে যাওয়ার পর আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা পুলিশ, র্যাব ও ডিবির পোশাক পরিহিত সদস্য এবং সাধারণ পোশাকধারী দুই ব্যক্তির উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
ওই গ্রুপটির মধ্য হতে পুলিশ লেখা পোশাকধারী দুজন, ডিবি লেখা পোশাকধারী একজন ও সাধারণ পোশাকধারী দুজন ব্যক্তিকে আগুন লাগাতে দেখা গেছে। অপরদিকে কুয়ামারা, সাহেবগঞ্জ ও হরিণমারী এলাকায় সাঁওতালদের নির্মিত স্থাপনায় কতিপয় স্থানীয় জনতা আগুন লাগিয়েছে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী